
মুম্বই, ২৪ নভেম্বর: ভারতে এই প্রথম কোভিড-১৯ রোগীর অন্ত্র প্রতিস্থাপন (Intestine Transplant) হল পুনের জুপিটার হাসপাতালে। ১০ বছরের ওম ঘুলেকে বাঁচাতে এমন জীবনদায়ী কঠিন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। ওম মহারাষ্ট্রের মাহাদ শহরের বাসিন্দা। এই নাবালক করোনা পরবর্তী অসুস্থতায় ভুগছিল। যা তার অন্ত্রকে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। প্রায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওম। সামান্য উপসর্গ নিয়ে গত জুলাইতে মারণ রোগের শিকার হয় ওম ও তার বাবা। এক মাসের মধ্য়ে তাঁরা দুজনেই করোনার থাবা থেকে মুক্তি পান। তবে এরপরেই ঘটে বিপত্তি, ওমের পেটে শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে পানভেলের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে আগস্টের ৮ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিল ওই নাবালক। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা দেখেন ওমের অন্ত্রে রক্ত জমাট বেঁধে আছে আর গ্যাংগ্রিনও ছড়িয়েছে একটি অংশে। এরপরেই অন্ত্রের অকেজো হয়ে যাওয়া অংশটি বাদ দিতে অস্ত্রোপচারও হয়। এরপরেই নবালককে থানের জুপিটার হাসপাতালে অন্ত্রের কিয়দংশ প্রতিস্থাপনের জন্য রেফার করা হয়। এই অস্ত্রোপারে সবথেকে কঠিন ভূমিকা পালন করেন ওমের বাবা। নাবালক ছেলেকে বাঁচাতে নিজের অন্ত্রের ২০০ সেন্টিমিটার ওমকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গত ৪ নভেম্বর পর্যন্ত থানের জুপিটার হাসপাতালে ভর্তি ছিল ওম। সেখানে তাঁর গ্যাংগ্রিন ছড়িয়ে পড়া অন্ত্রের আরও অনেকটা অংশকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর অন্ত্র দানের ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য চিকিৎসকরা অপেক্ষা করতে থাকেন। এরপর নাবালকের পরিবার তাকে জুপিটার হাসপাতালের পুনে শাখায় ভর্তি করে। সেখানে অন্ত্র প্রতিস্থাপনের ছাড়পত্র ছিল। আরও পড়ুন-Barge Capsized In West Bengal: বার্জ উল্টে পাথর বোঝাই ৮টি লরি তলিয়ে গেল গঙ্গায়, মালদহের মাণিকচকে চাঞ্চল্য
পুনের এখানেই আগে তিন মাস চিকিৎসাধীন ছিল ওম। সেখানেই তার অস্ত্রোপচার ও প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। টানা ১৫ ঘণ্টা ধরে চলে প্রতিস্থাপন। এর মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল পাঁচ ঘণ্টায় ২০০ সেন্টিমিটার অন্ত্রের জন্য অস্ত্রোপচার চালায়। তারপর সেই অন্ত্র প্রতিস্থাপন হয় ১০ ঘণ্টা ধরে। অস্ত্রোপচারের পরের দিন অর্থাৎ ১০০ দিন পর প্রথম তৃপ্তি করে খাবার খায় নাবালক। ওমের সুস্থতার নেপথ্যে রয়েছ্ন সেই হার না মানা চিকিৎসকের দল ও তার বাবা। যিনি নিজের অন্ত্রের কিয়দংশ ছেলেকে সুস্থ করতে দান করেছেন। এই ঘটনাই প্রমাণ করে ফুসফুস বা শ্বাসনালি নয় করোনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে অন্ত্রও। কয়েক মাস আগে ইটালিতেও একই ঘটনা ঘটেছিল।