নতুন দিল্লি, ২৪ এপ্রিল: করোনাভাইরাস (Coronavirus) প্রতিরোধে প্লাজমা থেরাপির (Plasma Therapy) প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। মঙ্গলবার দিল্লিতে ৪ জনের করোনা রোগীর চিকিৎসায় এই থেরাপি ব্যবহার করা হয়। ডাক্তারদের দাবি তাতে ভালোই ফল দিয়েছে। হাসপাতালের রিপোর্ট পাওয়ার পরে আজই প্লাজমা থেরাপি নিয়ে জরুরি ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বাইজাল জানিয়েছিলেন, করোনায় গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত COVID-19 রোগীদের জীবন বাঁচাতে পরীক্ষার ভিত্তিতে চিকিত্সার জন্য প্লাজমা কৌশল ব্যবহার করবে। দিল্লিতে এক বেসরকারি হাসপাতালে ৪৯ বছরের এক রোগীর শরীরে এই প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়। আরও একজনের উপর ট্রায়াল করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর জানায়, এখনও অবধি রোগীদের শারীরিক অবস্থা উন্নতি হয়েছে। সংক্রমণ কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আরও পড়ুন, শুক্রবার দেশে মোট করোনা আক্রান্ত ২৩ হাজার ৭৭, গত ২৪ ঘণ্টায় মারণ রোগের কবলে ১৬৮৪ জন
We are happy with the positive results in the 4 patients. Blood & plasma is ready for 2-3 other patients that we have at LNJP hospital, we may give them the plasma therapy today: Dr. SK Sarin, Director, Institute of Liver & Biliary Science pic.twitter.com/iznlTHDme0
— ANI (@ANI) April 24, 2020
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানিয়েছিল যতদিন না কোভিড ভ্যাকসিন ও কার্যকরী ড্রাগ বাজারে আসছে, বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা যেতেই পারে। এক্ষেত্রে প্লাজমা-থেরাপি (Convalescent Plasma Therapy) এবং প্লাজমা এক্সচেঞ্জ থেরাপি, দু’রকম পদ্ধতির ব্যবহার হতে পারে বলে জানিয়েছিল আইসিএমআর। পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির(এনআইভি) সহযোগিতায় প্লাজমা থেরাপি নিয়ে গবেষণা চলছে আইসিএমআরে। জানানো হয়েছে, এই থেরাপিতে কিছুদিনের মধ্যেই ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমোদন চলে আসবে। এর পরেই মানুষের উপর ট্রায়ালের জন্য ব্যবহার করা হবে।
তবে ইতিমধ্যেই কেরালা ও গুজরাতের কয়েকটি হাসপাতালে এই থেরাপি শুরু করে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কেরল সরকারের উদ্যোগে কয়েকটি হাসপাতালে ডাক্তার ও বিজ্ঞানীদের নিয়ে তৈরি হযেছে টাস্ক ফোর্স। প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ কীভাবে হবে সেই নিয়ে প্রোটোকল বানানো হয়েছে। অন্যদিকে, আহমেদাবাদের দু’টি হাসপাতালে প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি নিয়ে গবেষণা চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন ও ব্রিটেনে।
কী এই প্লাজমা থেরাপি? এটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের শরীরের প্লাজমা বা রক্তরস নিয়ে করোনা আক্রান্তদের শরীরে প্রতিস্থাপন করা। সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির অ্যান্টিবডি আক্রান্তের শরীরে গিয়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসকে হারিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পারবে বলেই বিজ্ঞানীদের ধারণা। আরও তথ্য পাওয়া গেছে, কোনও ব্যক্তি করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরে একাধিকবার তাঁর শরীরে পরীক্ষা করে দেখা হয়। একবার সুস্থ হওয়ার পর ১৪ দিন ধরে যদি তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তখন তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ বলা যায়।