চীন এবং বিশ্বজুড়ে পূর্ব এশীয় সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এবং বিশেষ উৎসব হল চীনা নববর্ষ। এই উৎসব পরিবার, ঐতিহ্য এবং সুখের প্রতীক। শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখে, প্রতি বছর অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হয় এই উৎসবটি। ২০২৫ সালে চীনা নববর্ষ শুরু হচ্ছে ২৯ জানুয়ারি, বুধবার এবং ১২ ফেব্রুয়ারি, বুধবার পর্যন্ত চলবে। এই ১৫ দিন ধরে সমগ্র চীন এবং অন্যান্য স্থানে দেখতে পাওয়া যাবে উৎসবের পরিবেশ। চীনে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি ছুটি থাকবে, যাতে পরিবার এবং সম্প্রদায় নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে একত্রিত হতে পারে।
২০২৫ সালের প্রতীক হল সাপ, যা জ্ঞান, সৌন্দর্য এবং অন্তর্দৃষ্টির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। সাপের বছরে জন্মগ্রহণকারীদের প্রায়শই আত্মনির্ভরশীল, সম্পদশালী এবং ধৈর্য ও কৌশলের সঙ্গে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে সক্ষম হিসেবে দেখা হয়। ২০২৫ সালে সাফল্যের জন্য সতর্ক পরিকল্পনা এবং বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। চীনা নববর্ষের শুরু সম্পর্কে একটি প্রাচীন লোককাহিনী রয়েছে। এই কাহিনী অনুসারে, নিয়ান নামে এক সমুদ্র দানব প্রতি বছর নববর্ষের প্রাক্কালে গ্রামগুলিতে আতঙ্ক সৃষ্টি করত। কিন্তু মানুষ আবিষ্কার করে যে নিয়ন লাল রং এবং উচ্চ শব্দকে ভয় পায় সেই দানব। সেই থেকে আতশবাজি পোড়ায়, লাল পোশাক পরে এবং লাল সাজসজ্জা দিয়ে ঘর সাজায় মানুষ।
পারিবারিক পুনর্মিলন চীনা নববর্ষ উৎসবের সবচেয়ে বিশেষ ঐতিহ্য। এই উৎসবে সিংহ এবং ড্রাগন নৃত্যের মতো এই ঐতিহ্যবাহী নৃত্যগুলি মন্দ আত্মাদের তাড়ানো এবং সৌভাগ্য বয়ে আনার জন্য পরিবেশিত হয়। শিশু এবং তরুণদের আশীর্বাদ এবং শুভকামনা জানানোর জন্য লাল খামে টাকা দেওয়া হয় এই উৎসবে। ১৫ দিনের এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটে লণ্ঠন উৎসবের মাধ্যমে, যখন রাস্তায় লণ্ঠন জ্বালানো হয়। ঐক্য ও আশার বার্তা ছড়িয়ে দেয় লণ্ঠন উৎসব। বর্তমান যুগে বিশ্বব্যাপী উৎসবে পরিণত হয়েছে চীনা নববর্ষ। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশের পাশাপাশি নিউ ইয়র্ক, লন্ডন এবং সিডনির মতো বড় শহরগুলিতেও মহা জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হয় চীনা নববর্ষ উৎসব।