সুপ্রিম কোর্ট (Photo Credits: IANS)

নতুন দিল্লি, ৭ জানুয়ারি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় সরব গোটা দেশ। এর জেরে রাজধানী দিল্লি থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, পাঞ্জাব, অসম, ত্রিপুরা, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, মুম্বইতে চলছে প্রতিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন, বিক্ষোভ সমাবেশ। এর জেরে অশান্তি, গুজব, ছাত্রদের উপরে পুলিশি হামলা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর কিছুই বাদ যায়নি। এবার সেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় সরব হলেন আইনজীবীরা। মঙ্গলবার বিকেলে সু্প্রিম কোর্টের (Supreme Court) লনে জড়ো হয়ে একজোটে সমস্বরে পড়লেন সংবিধানের (Constitution) প্রস্তাবনা (preamble)। মূলত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ২০১৯-এর বিরোধিতাতেই এই পাঠপর্ব চলল।

তবে শুধু সুপ্রিম কোর্টেই নয়, বেশ কয়েকদিন আগে মাদ্রাজ হাইকোর্টের আইনজীবীরাও সম্মিলিতভাবে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠের মধ্যে দিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করেছেন। এই প্রসঙ্গে বার ও বেঞ্চের তরফে এক আইনজীবী জানিয়েছেন, এই প্রস্তাবনা পাঠের অন্যতম উদ্দেশ্যই হচ্ছে বিচারপতিদের মনে করিয়ে দেওয়া যে এটাই আমাদের সংবিধান। মূলত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় যখন দেশের মানুষ প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। এই নয়া আইনের সারকথা যে সংবিধানের পরিপন্থী তানিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। তাইতো আর চুপ করে থাকতে পারলেন না আইন ব্যবসায়ীরা। নিজেদের মতামত জানিয়ে প্রতিবাদে শামিল হলেন। যদিও সেই প্রতিবাদের ধারা খানিকটা আলাদা। এদিকে প্রায় ৬০-এরও বেশি আবেদন সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়েছে। সব আবেদনই এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আই ২০১৯-এর পুনর্বিবেচনা কেন্দ্রিক। চলতি মাসের ২২ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানেই দেশের শীর্ষ আদালের চূড়ান্ত রায় জানা যাবে। যদিও প্রথম শুনানিতে বলা হয়েছিল, এই নয়া আইন বাতিল হচ্ছে না। তবে আইনের বৈধতা যাচাই করা হবে।

মূলত সিএএ বিরোধী আন্দোলনকে একবারে চরম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছিল বছর শেষে রাজধানী। সেখানকার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে নিরস্ত্র মৌন আন্দোলনে শামিল হওয়া ছাত্রছাত্রীদের উপরে পুলিশি হামলার ঘটনা। পুলিশ যে প্ররোচনামূলক হামলা করেছে তার প্রমাণ বিভিন্ন ভিডিওতে মিলেছে। পুলিশের পোশাকে ক্যাম্পাস চত্বরে লাঠি নিয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে আরএসএস কর্মীকেও। তারপর দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রদের উপরে নেমে আসা হামলার প্রতিবাদে শুরু হয় বিক্ষোভ সমাবেশ। বাদ যায়নি কলকাতাও। আগামিকাল এর বিরুদ্ধে সারা দেশে বনধ ডেকেছে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি।