শুক্রবার রাত একটা বেজে ৫২ মিনিটে বান্দ্রার গুরু নানক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলিউডের খ্যাতনামা কোরিওগ্রাফার সরোজ খান। মাস্টারজিকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ তাঁর অন্যতম একনিষ্ঠ ছাত্রী মাধুরী দীক্ষিত (Madhuri Dixit)। তিনি তো শুধু গুরু ছিলেন না, মাধুরির অন্যতম বন্ধুও ছিলেন। তাই সরোজ খানের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই চোখের জল আর বাঁধ মানছে না। কী ভাষায় যে সরোজ জি-র পরিবারকে সমবেদনা জানাবেন, তা মাধুরির জানা নেই। তবুও গুরুর উদ্দেশ্যে টুইট করলেন প্রিয় ছাত্রী। সরোজ খান আর মাধুরী দীক্ষিত বলিউডের হিটজুটি। জীবনের শেষ কাজটিও প্রিয় ছাত্রীর সঙ্গেই করেছেন তিনি গতবছর। ২০১৯-এ করণ জোহরের ছবি কলঙ্ক-তে অভিনয় করেন মাধুরী দীক্ষিত, যেখানে তাঁর নৃত্যগুরু ছিলেন এক এবং অদ্বিতীয় মাস্টারজি সরোজ খান।
টুইট বার্তায় মাধুরী জানান, সরোজ জি-র মৃত্যুর খবরে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলাম। “আমার নাচের সমস্ত কৃতিত্ব সরোজজির। ‘এক দো তিন’ নাচ আর ‘মোহিনী’ লোকের মনে গেঁথে গেছে ওঁর জন্যই। আমি ভাল নেই। কী ভাষায় ওঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাব।” সরোজ-মাধুরীর শেষ যুগলবন্দি, কলঙ্ক ছবির ‘তবহা হো গ্যয়ে’। যাঁরা এই ছবি দেখেছেন তাঁরা হয়তো আজ আরও একবার দেখবেন, এই মাস্টারস্ট্রোকের জন্যই। একটি নাচও যে একটি দৃশ্য বুনতে পারে, সেটা বার বার সরোজ খান দেখিয়ে দিয়েছেন। এবং এই নাচের দৃশ্যের কথা শুনেই মাধুরী নাকি বলেছিলেন, ‘‘সরোজজি ছাড়া এই দৃশ্যের কোরিওগ্রাফি আর কারওর পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি দেখালে আমি অনুসরণ করব।’’ সরোজ খান হিন্দি ছবির নায়ের কায়া হলে মাধুরী তাঁর ছায়া। আরও পড়ুন-Saroj Khan Dies: হৃদরোগে নিভল প্রাণ, প্রয়াত বলিউডের কোরিওগ্রাফার সরোজ খান
গুরু-শিষ্যের এই পরম্পরা শুরু ‘তেজাব’-এর ‘এক দো তিন’ দিয়ে। ভীষণ কড়া মাস্টারমশাই সেদিন নাচিয়ে নাচিয়ে হা-ক্লান্ত করে দিয়েছিলেন তাঁর নতুন ছাত্রীকে। তখনও মাধুরী সরোজের চোখের মণি নন। তবে ‘নাড়া’ বেঁধেছিলেন ওই নাচ দিয়ে। ‘বেটা’র ‘ধক ধক করনে লাগা’, থানেদার-এক ‘তাম্মা তাম্মা লোগে’, ‘খলনায়ক’ ছবির ‘চোলি কে পিছে ক্যয়া হ্যায়’, রাজা-র ‘আঁখিয়া মিলাউ কভি আঁখিয়া চুরাউঁ’, ‘দেবদাস’-এর ‘ডোলা রে ডোলা’র মতো ইতিহাস সৃষ্টিকারী নাচের দৃশ্যায়ন। সরোজ খানকে হারিয়ে আস নিঃস্ব হয়ে গেলেন মাধুরী দীক্ষিত।