
দিল্লি, ১২ মার্চ: পাকিস্তানি (Pakistani Train Hijack) ট্রেন জাফ্ফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করে কার্যত শোরগোল ফেলে দিয়েছে বালোচ লিবারেশন আর্মি (Baloch Liberation Army)। পাকিস্তানের সঙ্গে কোনওভাবে বালোচিস্তান থাকবে না বলে দীর্ঘদিনের প্রতিবাদকে কার্যত বিদ্রোহের রূপ দিয়েছে বালোচ লিারেশন আর্মি। বিএলএ যেভাবে পাকিস্তানি ট্রেন হাইজ্যাক করে সেখান থেকে পণবন্দিদের কবজায় নেয়, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কিন্তু এই বালোচ লিবারেশন আর্মির সদস্য কারা? এদের দাবিই বা কী, সে বিষয়ে জানা যাক।
ইরান এবং আফগানিস্তান লাগোয়া যে অংশ, তা বালোচিস্তান হিসেবে খ্যাত। বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ বালোচিস্তানের দখল যেমন পাকিস্তানের হাতে রয়েছে, তেমনি চিনও কবজা করে রেখেছে সেখানকার খনিজ। চিনের একাধিক প্রকল্প বালোচিস্তান থেকে যেমন চালানো হয়, তেমনি বহু চিনা কোম্পানির খনিজ যায় এই অংশ থেকে। ফলে পাকিস্তান এবং চিন কেন বালোচিস্তানের মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, তা নিয়েই প্রতিবাদ বালোচ লিবারেশন আর্মির।
বালোচ লিবারেশন আর্মির লক্ষ্য কী?
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ এবং আফগানিস্তান, উত্তর এবং পশ্চিম লাগোয়া সীমান্ত বালোচিস্তান হিসেবে খ্যাত। বালোচিস্তান কখনও পাকিস্তানের অংশ ছিল না। ফলে বালোচিস্তানকে কেন পাক সেনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে হবে, তা নিয়ে বিরোধ বহুদিনের। এই বিরোধ থেকেই বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির জন্ম।
বালোচিস্তানের (Balochistan) মাটির নীচে যে গ্যাস এবং খনিজের ভান্ডার রয়েছে, তার লোভেই পাকিস্তান সেখানকার মানুষকে জোর করে তাদের পতাকার নীচে রাখছে বলে অভিযোগ। তেমনি চিনের একের পর কোম্পানি বালোচিস্তান থেকে খনিজ তুলে নিয়ে সমৃদ্ধ যেমন হচ্ছে, তেমনি সেখানকার মানুষকে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করে, তাঁদের আরও দুর্দশায় ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ বিএলএ-র।
বালোচ লিবারেশন আর্মি কীভাবে বিদ্রোহ করে?
বিএলএ-র হাতে রয়েছে বহু আত্মঘাতী বিদ্রোহী। বালোচিস্তানের বিদ্রোহীদের এই সংগঠন মহিলাদের ব্যবহার করে সুইসাইড বোমা নাব হিসেবে। পাশাপাশি চিনের (China) যে সমস্ত নাগরিক বালোচিস্তানে কর্মরত, তা দের উপরও এই বিদ্রোহী সংগঠন হামলা চালায়। করাচির একটি বিশ্বিবিদ্যালয়েও হামলা চালাতে দেখা যায় বিএলএ-কে।
বিএলএ যেমন স্বাধীন বালোচিস্তান চায়, তেমনি করাচির বেশ কিছু অংশ তাদের মধ্যে বলে একাধিকবার দাবি করা হয়। বেজিং যেভাবে ইসলামাবাদকে সাহায্য করে বালোচিস্তানকে নিজেদের কবজা রাখতে, তার বিরুদ্ধেও সজোরে প্রতিবাদ এই বিএলএ-র।
বালোচিস্তানকে অর্থনৈতিক করিডর হিসেবে ব্যবহার করে চিন। ফলে বেজিং থেকে একাধিক প্রকল্পের স্বার্থকতা যাতে পাক সেনার হাত ধরে হয়, তার জন্যই খনিজ সমৃদ্ধ বালোচিস্তানকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।