Gaza Mass Starvation (Photo Credit: X)

Gaza Famine: গাজায় অবশেষে সরকারিভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করল রাষ্ট্রসংঘ (United Nations)। সরকারি হিসাবে এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে কোনও জায়গায় দুর্ভিক্ষ হল। রাষ্ট্রসংঘের (UN) হিসাবে গাজায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ 'ভয়াবহ খিদে'-এর মধ্যে রয়েছে। সেখানকার ৩০ শতাংশ শিশু অনাহারে ভুগছে বলেও রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে জানানো হয়েছে। এভাবে চললে প্রতি ১০ হাজার জনের মধ্যে গাজায় দুজন অনাহারে মারা যাবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের হিসাবে কোনও অঞ্চলে 'দুর্ভিক্ষ' হতে গেলে প্রধানত যে বিষয়গুলি দরকার হয়, তার সবগুলিই এখন গাজায় রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের অধীনে 'ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন' (IPC) গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করে জানায়, সেখানে ৩০ শতাংশ শিশুর তীব্র অপুষ্টি (Acute Malnutrition), পরিবারগুলোতে খাদ্যে প্রবেশাধিকার প্রায় শূন্য চলে গিয়েছে। গাজায় পানীয় জলের অভাবে কলেরা সহ নানা মহামারীর আশঙ্কাও করা হয়েছে।

গাজা সিটি সহ সমগ্র গাজাতেই দুর্ভিক্ষটা যা আটকানো সম্ভব হত বলে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রসংঘের সাহায্য দফতরের প্রধান টম ফ্লেচার। রাষ্ট্রসংঘের অভিযোগ, গাজায় আসা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য বা ত্রান সামগ্রী (খাবার, পানীয় জল, ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস) ইজরায়েল এমন পরিকল্পিতভাবে সীমান্ত বা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আটকে দিয়েছে, যাতে সেখানে দুর্ভিক্ষ হয়। ইজরায়েলের অবশ্য দাবি, গাজায় কোনও দুর্ভিক্ষ নেই। তাদের দাবি, সীমান্ত দিয়ে গাজায় লক্ষাধিক ত্রান সামগ্রীর ট্রাক সেখানে ঢুকেছে। তাই দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই, যদি না হামাস জঙ্গিরা ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু করে বা লুট করে। তবে সেখানকার কিছু মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রেখে, সেটা আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সামনে ছবিতে দেখিয়ে সহানুভূতি আদায়ের ছক কষেছে হামাস। হামাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী লুঠ করার অভিযোগও তুলেছে ইজরায়েল।

গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা UN-এর

দেখুন ভিডিও

গাজায় সীমান্তে ত্রান সামগ্রী অবাধে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইজরায়েল। কারণ বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশের দাবি, ত্রান সামগ্রী পাঠানোর নামে ট্র্য়াকে করে হামাস জঙ্গিদের জন্য অস্ত্র, বন্দুক পাঠানো হতে পারে। যা তাদের ওপরেই প্রয়োগ করতে পারে হামাস। আর তাই মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, এমনকী ইউরোপ, কিংবা এশিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ত্রান সামগ্রীর গাড়িও গাজা সীমান্তে আটকে থাকে বলে অভিযোগ। সীমান্তে জটিলতার কারণে আকাশপথে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করেছে আমেরিকা, জর্ডন, ইউএই, ইজিপ্ট, ইন্দোনেশিয়া সহ নানা দেশ।

দেখুন ভিডিও

গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানোর জন্য বিমান থেকে প্যারাসুটের মাধ্যমে ত্রাণ ফেলা হচ্ছে। গাজায় প্যারাসুটের মাধ্যমে ত্রাণে ময়দা, চিনি, টিনজাত খাবার, পানীয় জল ইত্যাদি রয়েছে,যদি প্রয়োজনের তুলনায় তা বেশ কম। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আকাশপথে প্যারসুটে করে পাঠানো ত্রান সামগ্রী নিতে গাজায় শয়ে শয়ে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। বিমানে ফেলা ত্রাণ গাজার ২০ লাখ মানুষের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়।

দেখুন আকাশপথে প্যারাসুটের মাধ্যমে ত্রান পাঠানো হচ্ছে

ইজরায়েল দাবি করেছে, তারাও গাজায় আকাশপথে ত্রাণ পাঠাচ্ছে এবং মানবিক করিডোর খুলেছে। তবে আকাশপথে ত্রানের একটা বড় অসুবিধা হল, ত্রাণের ভারী বাক্স বা প্যালেট মাথায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জায় আকাশপথে ত্রাণ ফেলার সময় দুর্ঘটনায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। ত্রাণের প্যারাসুট বিকল হয়ে তাঁবুতে পড়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।