জামাল খাসোগ্গির খুনের বর্ণনায় সমাজকর্মীরা(Photo Credit: Getty Images)

য়াশিংটন, ২৬ সেপ্টেম্বর: ওয়াশিংটন পোস্টের জনপ্রিয় কলামিস্ট ও সৌদি রাজ পরিবারের প্রখ্যাত সমালোচক জামাল খাসোগ্গিকে (Jamal Khashoggi,) খুনের দায়ভার স্বীকার করলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন (Prince Salman)। একটি তথ্যচিত্রে তাঁর এই স্বীকারোক্তি রেকর্ড হয়েছে। গত বছর ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটের মধ্যে নৃশংসভাবে খুন হন জামাল খাসোগ্গি। জানা গিয়েছে, যুবরাজ সলমনের রেকর্ডেড স্বীকারোক্তি শোনা যাবে আগামী ১ অক্টোবর। খাসোগ্গির মৃত্যুবার্ষিকীর ঠিক আগের দিন। আসন্ন পিবিএস তথ্যচিত্র খানা তৈরি করছেন সাংবাদিক মার্টিন স্মিথ। তাঁকেই এক সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন বলছেন, “এই খুনের দায়িত্ব আমার উপরেই ছিল, আমার চোখের সমানেই গোটা ঘটনাটা ঘটেছে।”

এত কিছুর পরেও মহম্মদ বিন সলমনের দাবি, এই খুনের ঘটনায় সরাসরি তাঁর কোনও ভূমিকাই ছিল না। যেহেতু সৌদি আরবের দায়িত্বভার তাঁর মাথায় রয়েছে, তাই এই থুনের দায়ভারও তাঁর কাঁধে এসে পড়েছে। খাসোগ্গিকে খুনের এই যে নোংরা পরিকল্পনা হল আর তিনি আগে থেকে কিছুই জানতে পারলেন না, এটা কী করে হয়? এর উত্তরে সলমনের দাবি, সৌদি সরকারের কাজের জন্য় ৩০ লক্ষ কর্মী রয়েছে। তারা কখন কী কাজ করছে তা দেখা বা সঠিক মনিটরিং করা যুবরাজের পক্ষে সম্ভব নয়। এই দায়িত্ব থাকে মন্ত্রীদের উপরে। সেখানে যদি কোনওরকম অবহেলা হয়ে থাকে তবে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ওয়াশিংয়ন পোস্টের এই প্রখ্যাত সাংবাদিককে খুনের পর তানিয়ে মুখ খুলতে চায়নি রিয়াধ, এমনকী খুনের ঘটনাও অস্বীকার করেছিল। কিন্তু তুরস্কের তদন্তকারী দল খুনিদের চিনিয়ে দেয়। এক সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে যেখানে দেখা যায় ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করছেন জামাল খাসোগ্গি, কিন্তু তাঁর বেরিয়ে আসার কোনও ফুটেজ নেই। এই ঘটনার পর খুনের দায় আর এড়াতে পারেনি সৌদি সরকার। আরও পড়ুন-Hafiz Saeed: হাফিজ় সইদকে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার অনুমতি দিল রাষ্ট্রসংঘ

এতবড় হত্যাকাণ্ডের পর কিন্তু শোক সন্তপ্ত পরিবারের হাতে খাসোগ্গির দেহ তুলে দেয়নি সৌদি কনস্যুলেট। পরে কনস্যুলেটের বাইরে টানা বিক্ষোভ শুরু হলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়। খাসোগ্গির দেহ কুচি কুচি করে কেটে বড় গর্তে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই চাঞচল্যকর খুনের পিছনে সৌদি সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মাথা কাজ করেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত রাষ্ট্র সংঘ। পরে মহম্মদ বিন সলমন সহ সৌদি রাজের কর্তাব্যক্তিদের জেরার অনুমতিও চাওয়া হয়। তবে সৌদি সরকারের তরফে রাষ্ট্র সংঘের প্রতিনিধি দলকে সেদেশের মাটিতে কোনও তদন্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। উল্টে বলা হয় সরকারের তরফে এই ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে। জানা গিয়েচে, তদন্তে ১২ জন সৌদি কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে। এদের নিয়ে গোপন শুনানিও হয়েছে তবে শাস্তি কেউ পেল কি না তা এখনও জানা যায়নি।