সোনার লোভে আমাজনের অরণ্যে খুনোখুনি, ব্রাজিলে চাঞ্চল্য
ঘটনাস্থল(Photo Credit: Twitter)

রিও ডি জেনেইরো,৩০ জুলাই:  সোনার খনির (gold miners) দখল নিতে হবে। আমাজনের জঙ্গলে গিয়ে এলোপাথাড়ি হামলা চালাল বন্দুকবাজের দল। এই হামলার মাঝে পড়ে খুন হয়ে গিয়েছেন গ্রামের মোড়ল। সোমবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ব্রাজিলে আমাজনের (Amazon) গভীর জঙ্গলের মধ্যে থাকা আদিবাসীদের গ্রাম আমাপা প্রদেশে। সেই এলাকায় এখনও আধুনিকতার ছোঁয়া পড়েনি। লোভের চকচকে চোখ দেসেনি সেখানকার সহজ সরল আদিবাসী জনজীবন। এবার সোনার কোঁজে সেখানেই হানা দিল হিংস্র বন্দুকবাজের দল। অজ্ঞাত পরিচয় লোকজনদের এভাবে গ্রামে ঢুকতে দেখে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মোড়ল, তাঁকেই কিনা কুপিয়ে খুন করা হল। আরও পড়ুন-আহামরি শখ! মিসাইল লঞ্চার নিয়ে প্লেনে চড়তে গিয়ে পাকড়াও যাত্রী

মূলত সোনার খনির দখলদারি নিয়েই যে এই হিংসার সূত্রপাত তা এককথায় মেনে নিচ্ছে পুলিশ। এই খনের ঘটনার দায়ে প্রশাসনকেই দুষছে এলাকাবাসী। বাসিন্দাদের একাংশের মত খুব শিগগির আমাজনের গভীর অরণ্যের অমূল খনিজ ও সোনার দখলদারি নিয়ে বিভিন্ন দুষ্কৃতীদল জঙ্গলে আসবে। তারপর কে হবে সবকিছুর মালিক তানিয়ে যুদ্ধ বেধে যাবে। আজকের এই খুনোখুনির পরিস্থিতির জন্য সেখানকার প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোকেই দায়ী করছেন বাসিন্দারা। কয়েকদিন আগে এক বিবৃতিতে বলসোনারো নিজের মুখেই বলেছেন, আমাজনের গভীর জঙ্গলে সোনা-সহ বিভিন্ন অমূল্য খনিজ রয়েছে। যার উত্তোলন খুব জরুরি। সেসব বিক্রি করে লাভবান হতে পারে আমাজন এলাকা। সেই লাভের ভাগ পাবে সেখানকার বাসিন্দারাও। এজন্য আমেরিকার সহায়তাও চেয়েছেন তিনি। অভিযোগ তারপর থেকেই আমাজনের গভীর অরণ্যের শান্ত জনজীবনে নেমে এসেছে অশান্তির কালো ছায়া।

বাসিন্দাদের দাবি, ব্রাজিলের অতি-দক্ষিণপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো-ই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তিনি জঙ্গল ও জঙ্গলবাসীদের সংরক্ষণের বিরুদ্ধে। বলসোনারো মনে করেন, যে সংখ্যক মানুষ ওখানে থাকে, তার তুলনায় জঙ্গল অনেক বড়। তাই জঙ্গলের খনি এলাকা খুলে দিতে আপত্তি নেই তাঁর। এমনকি বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে খননকাজ শুরু করার চিন্তাভাবনা রয়েছে বলেও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি। আর তারপর থেকেই গভীর অরণ্যে চলছে বেআইনি খনন কাজ।জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ১০-১৫ জনের একটি সশস্ত্র দল আমাপার ইভিটোটো গ্রামে হানা দেয়। ওয়াজাপি সম্প্রদায়ের বাস ওই গ্রামে। জঙ্গলের মধ্যে প্রায় ৬ লক্ষ হেক্টর এলাকাজুড়ে ১২০০ ওয়াজাপি বাস করেন। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বহিরাগতদের দেখে ভয়ে ইভিটোটো গ্রাম ছেড়ে পালান সেখানকার বাসিন্দারা। কাছের মারিরি গ্রামে আশ্রয় নেন তাঁরা। কাছের বলতেও পায়ে হেঁটে ৪০ মিনিটের দূরত্ব। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়াজাপিদের থেকে জানতে পেরেছে, তাঁদের নেতা, ৬৮ বছর বয়সি এমিরা ওয়াজাপিকে খুন করেছে সোনা-সন্ধানীরা। তারা নদীর কাছে ফেলে রেখে যায় এমিরার দেহটা। দেহে কুপিয়ে খুন করার চিহ্ন স্পষ্ট।