কলকাতা, ১৭ ডিসেম্বর: রাজ্য সরকারের আপত্তিকে রীতিমতো অগ্রাহ্য করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশকর্তাকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে পোস্টিং করা হল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীণ ত্রিপাঠীকে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র সীমাবলে ডেপুটেশনে পাঠানো হচ্ছে। তাঁর ডেপুটেশনের মেয়াদ ৫ বছর। পাঁচ বছরের জন্য ইন্দো টিবেট বর্ডার পুলিশের আিজি পদে পাঠানো হচ্ছে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ রাজীব মিশ্রকে। একইভাবে তিন বছরের জন্য ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চ বিপিআরডি-তে পাঠানো হচ্ছে ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডেকে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানতে পেরেই বিষয়টিকে অসাংবিধানিক বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আরও পড়ুন-Winter In West Bengal: শহরে ঢুকেছে উত্তুরে হাওয়া, শুক্রবারেই জাঁকিয়ে শীতের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের
GoI’s order of central deputation for the 3 serving IPS officers of West Bengal despite the State’s objection is a colourable exercise of power and blatant misuse of emergency provision of IPS Cadre Rule 1954. (1/3)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 17, 2020
This act is nothing but a deliberate attempt to encroach upon State’s jurisdiction & demoralize the serving officers in WB. This move, particularly before the elections is against the basic tenets of the federal structure. It's unconstitutional & completely unacceptable! (2/3)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 17, 2020
We wouldn’t allow this brazen attempt by the Centre to control the State machinery by proxy! West Bengal is not going to cow-down in front of expansionist & undemocratic forces. (3/3)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 17, 2020
রাজ্যের তিন আইপিএস কর্তার এহেন ডেপুটেশনের খবর কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মমতা। তিনি বলেন, “এ অসাংবিধানিক, কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” এরপরই টুইটের সিরিজে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন-
- নবান্নের আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের তিন আইপিএসকর্তাকে যেভাবে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে বদলি করল তা ক্ষমতার জঘন্য অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়। আইপিএস ক্যাডার রুল ১৯৫৪-র জরুরি ধারায় তাঁদের বদলি করা হয়েছে।
- এমন অসাংবিধানিক কাজ কখনওই মেনেনেওয়া যায় না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজ্যের এক্তিয়ারে নাক গলিয়ে কেন্দ্রের সরকার পশ্চিমবঙ্গ কর্মরত অফিসারদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই প্রক্রিয়া নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার মৌলিক শর্তকে লঙ্ঘন করে।
- অগণতান্ত্রিক শক্তির সামনে পশ্চিমবঙ্গ কখনওই মাথা নোয়াবে না। রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে নিজেদের মতো করে চালানোর যে চেষ্টা কেন্দ্র করছে, তা কখনউই বরদাস্ত করা হবে না।
এদিকে কেন্দ্রের এহেন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মমতা সরকারের রুখে দাঁড়ানোর বিষয়টি যে ফেলনা নয় তানিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। মূলত এতদিন ধরে তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন পদে থাকা প্রশাসনিক কর্তাদের বিরুদ্ধে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে একের পর এক নালিশ গিয়েছে। গত সপ্তাহে রাজ্যে এসেই শুধু ১৩১ জন বিজেপি কর্মীর খুনের প্রসঙ্গ টেনে ক্ষান্ত দেননি জেপি নাড্ডা। তিনি যে ১০০ জন মৃত কর্মীর তর্পণ করেছেন, তাও স্মরণ করাতে ভোলেননি। নাম না করে নরেন্দ্র মোদি বার বার একটা কথা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, বিরোধীদের মেরে ক্ষমতায় টিকে থাকার রাজনীতির পতন এবার নিশ্চিত। তবে বিরোধী বিজেপি শুধু তয়, কংগ্রেস সিপিএম-রএ এমন অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের একাংশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। এতদিন শুধু অভাব অভিযোগ যেত দিল্লির দরবারে। এবারে সেই অভাব অভিযোগ মেটাতে মাঠে নেমে পড়েছে নর্থব্লক। তাই এনিয়ে নবান্নের সঙ্গে কেন্দ্রে সঙ্ঘাত তো সময়ের অপেক্ষা মাত্র।