স্যাটেলাইট থেকে তোলা ঘূর্ণিঝড় আমফানের ছবি (Photo Credits: IMD)

কলকাতা, ১৯ মে: একে করোনায় রক্ষে নেই তাতে আবার জুড়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। মহা প্রলয় নিয়ে আসছে এই সুপার সাইক্লোন (Cyclone Amphan)। সোমবার শক্তি বাড়িয়ে রীতিমতো গর্জন শুরু করেছে। বুধবার আছড়ে পড়তে চলেছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। দিঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপ হয়ে স্থলভাগে ঢুকতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। এপ জেরে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার সরকারের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিবের একপ্রস্থ বৈঠকও হয়েছে। আমফানের ঝাপটায় সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে দিঘা, মন্দারমণি, সুন্দরবনের সমুদ্র সৈকত এবং উপকূলবর্তী এলাকায়। হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া-সহ বৃষ্টি মঙ্গলবার থেকেই শুরু হতে পারে। বুধবার গাঙ্গেয় বঙ্গের প্রায় সর্বত্র ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে।

তবে আজ থেকেই রাজ্যে খেল দেখাতে শুরু করবে আমফান। মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হুগলী, নদীয়ায় প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে কলকাতাতেও। বুধবার পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা এই সুপার সাইক্লোনের। ল্যান্ডফলের সময় আমফানের গতিবেগ ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা। আর সেরকম হলে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিদিনই বৈঠক করছে কেন্দ্র ও রাজ্য। একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে আমফানের মোকাবিলা করার জন্য। আরও পড়ুন-Donald Trump: এফডিএ-র সতর্কতা মানেননি, দেড় সপ্তাহ ধরে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এ দিন নবান্নে জানান, ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে বলা হয়েছে জেলাশাসকদের। উপকূলে যাঁরা থাকেন, তাঁদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলিতে যথাসম্ভব বিধি মেনে রাখতে হবে বাসিন্দাদের। বিপর্যয় মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এনডিআরএফ, এসডিআরএফের দল প্রস্তুত আছে। নবান্নেও দিনরাত উপস্থিত থাকবেন প্রশাসনিক কর্তারা। দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে বিশেষ ভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনে ঝড়ের বিপদ সামাল দেওয়ার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির বিষয়ে পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সুন্দরবনে নদীর কাছ থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে দিচ্ছেন বনকর্মীরা। কলকাতায় ঝড়ের সময় প্রাণহানি ঠেকাতে সব থানাকে নিজের এলাকার জরাজীর্ণ বাড়ির তালিকা তৈরি করতে বলেছে লালবাজার। ৩০ জনের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী পৌঁছে গিয়েছে হাসনাবাদে। পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে রাত পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে।