
সামনেই স্বামীর প্রথম পক্ষের ছেলের বিয়ে। আর পাত্রও আবার চাকরি করেন ভারতীয় রেলে। তবে সেই বিয়ের আগে বাড়ি থেকে আচমকাই লুট গেল লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না। গত সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্ক (Regent Park) থানা এলাকায়। প্রথমদিকে বাড়ির গৃহকর্ত্রী অভিযোগ করে যে বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল, আর তাঁরাই সর্বস্ব লুট করে পালিয়েছে। তবে পরবর্তীকালে তদন্তে নেমে খটকা লাগে পুলিশের। আর তারপরেই জেরা শুরু করা হয় ওই মহিলাকেই। তারপরই টানা জেরায় সে স্বীকার করেন জামাইবাবু রাজা নাগের সঙ্গে ডাকাতির গল্প ফেঁদে সমস্ত গয়না লুট করেন খোদ সোনালী বিশ্বাস। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ডাকাতি হল বিয়ের জন্য কেনা সোনা
জানা যাচ্ছে, রিজেন্ট পার্ক এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা পিকলু বিশ্বাস। তাঁর প্রথম স্ত্রীর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল। তারপরেই সোনালীকে বিয়ে করেন তিনি। পিকলু আর তাঁর প্রথম স্ত্রীয়ের ছেলে দেবজ্যোতি বিশ্বাস ভারতীয় রেলে কর্মরত। কয়েকদিন বাদেই তাঁর বিয়ে। আর সেই বিয়ের জন্য কমপক্ষে ৪ লক্ষ টাকার সোনার গয়না কিনেছিল বাড়িতেই রাখাছিল। এদিকে সোনালীর বাপের বাড়িতে অর্থাভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে তাঁর বোন ও ভগ্নীপতির ৬ লক্ষ টাকার দরকার ছিল। এই নিয়ে পিকলুকে জানালে তিনি দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।
জামাইবাবুর সঙ্গে ডাকাতির পরিকল্পনা
আর তারপরেই জামাইবাবু সঙ্গে নিজের বাড়িতে ডাকাতি করেন সোনালী। গত সোমবার সোনা লুট হওয়ার পর পুলিশকে নিজেই ফোন করে ডাকেন অভিযুক্ত। জানান, এদিন তিনি বাইরে বেরিয়েছিলেন। যখন তিনি ঢোকেন, তখন বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে তাঁর মুখে কাপড় গুজে ও হাত, পা বেধে সবকিছু লুট করে পালায়। প্রথমে এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হলেও পরে পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সন্দেহ হয়। কারণ যে সময় ঘটনাটি ঘটে তখন ওই এলাকায় সন্দেহজনক কিছুই দেখা যায়নি। এছাড়া বাড়ির সমস্ত কিছু তছনছ করে সবকিছু লুট করলেও সোনালীর গায়ের হাতের গয়নাগুলি কেন লুট করা হল না, এই প্রশ্নও উঠে আসে।
সোনা বিক্রি করেছে অভিযুক্তরা
তারপরেই পুলিশ সোনালীকে জেরা করতে শুরু করে। আর সেই জেরায় চাপে পড়ে সবকিছু স্বীকার করে নেন অভিযুক্ত। তারপরেই তাঁকে এবং রাজ নাগকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও অভিযুক্তরা সমস্ত গয়না বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে সোনা বিক্রির টাকা কোথায় রয়েছে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।