রায়গঞ্জ, ২ আগস্ট: চারবছরের বিবাহিত জীবনে মারধর আর অপমান ছাড়া কিছুই জোটেনি। বার বার বাপের বাড়ি থেকে টাকা, গয়না আর আনাজপাতি নিয়ে আসার চাপ দিত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সম্প্রতি সেই দাবি মানতে রাজি হননি গৃহবধূ নুরবানু খাতুন। রেগেমেগে সর্বসমক্ষে স্ত্রীকে এক তালাক দেন স্বামী সুন্দরলাল আলি, নুরবানু খাতুন সেই তালাকের প্রতিবাদ করেছিলেন। এই অপরাধে তাঁকে গলা টিপে খুন করল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ ফেলে গেল আমবাগানে। বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানার গৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুরে। আরও পড়ুন-মুকুল রায়কে ১০ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করা যাবে না, রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃতার স্বামী সুন্দরলাল আলি, শ্বশুর শ্বশুর সামাদ আলি, শাশুড়ি মতিলাল বিবি, জা আয়েশা বিবি, ভাসুর মহম্মদ হাসিবুর ও দেওর মহম্মদ সইফুদ্দিন। এদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে তদন্তে শুরু হয়েছে। যদিও মৃতার বাপের বাড়ির তরফে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিবার সূত্রে খবর, নুরবানু তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। নুরবানুর স্বামী সুন্দরলাল আলি পেশায় চাষি। চার বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। নুরবানুর বাপের বাড়ি ইটাহার থানার সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজিতপুর এলাকায়। মৃতার কাকা মহম্মদ সলিমুদ্দিনের অভিযোগ, বিয়ের এক বছর পর থেকে সুন্দরলাল ছাড়াও তাঁর পরিবারের লোকেরা বাপের বাড়ি থেকে কখনও টাকা, আবার কখনও চাল-ডাল ও আনাজ চেয়ে নুরবানুর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। কিন্তু নুরবানু আনতে অস্বীকার করায় অভিযুক্তেরা তাঁকে মাঝেমধ্যেই মারধর করতেন। সলিমুদ্দিনের আরও অভিযোগ, নুরবানুর উপর অত্যাচার রুখতে গত দু’বছরে তাঁরা তাঁর শ্বশুরবাড়িতে একাধিক বার কখনও পাঁচ হাজার, কখনও ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন।
তিন তালাক দিলে স্বামী এবার জেলে যাবেই। খুব শিগির এই আইন আসতে চলেছে। চলতি সপ্তাহেই রাজ্য সভায় পাস হয়ে গিয়েছে তিন তালাক বিল। আর বিল পাস হতে না হতেই তালাকের প্রতিবাদ করে খুন হয়ে গেলেন গৃহবধূ। গোটা ঘটনায় এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। সুন্দরলাল-সহ গোটা পরিবারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে সরব এলাকাবাসী।