কলকাতা, ১৫ ডিসেম্বর: নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship Act) প্রতিবাদে রবিবারও বিক্ষোভে তেতে উঠল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা। গতকাল দিন ভর বিক্ষোভের পর এ দিন সকাল হতেই বিক্ষোভ শুরু হয়। দফায় দফায় সড়ক ও রেল অবরোধ শুরু হয়। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, শনিবার দিনভর বিক্ষোভের পর এ দিন সকালেও তেতে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) খড়দা, আমডাঙা এবং দেগঙ্গা। আমডাঙায় ধানকল মোড় অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। সোনাডাঙা মোড়েও অবরোধ করা হয়। ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কে (National Highways) টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করলে যানজট সৃষ্টি হয়। টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হয় দেগঙ্গাতেও। ভ্যাবলায় ট্রেন অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। নলহাটি-আজিমগঞ্জ, আজিমগঞ্জ-নিউ ফরাক্কা এবং কৃষ্ণনগর-লালগোলা শাখায় এখনও ট্রেন পরিষেবা চালু হয়নি। হাওড়ায় কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা ব্রিজের কাছে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।
বিক্ষোভের কারণে বিভিন্ন বিভাগে রেল চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষই অসুবিধা ভোগ করছে। এমনকি নিরাপত্তা সংক্রান্ত রেলের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার কারণে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষ অসুবিধা ভোগ করছেন। ফলে সাধারণ মনুষের কাছে আবেদন রেল চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করুন। আজ সকাল থেকে বিক্ষোভের জেরে পূর্ব রেলের বিভিন্ন শাখায় আটকে রয়েছে বহু লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেন। এক বিজ্ঞপ্তিততে পূর্ব রেল জানিয়েছে, নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের কাটিহার ডিভিশনের ভালুকা স্টেশনে ট্রেন আটকে দেওয়া হয় সাড়ে ১০টা থেকে। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অবরোধ করে স্থানীয়রা। মালদা টাউনের কুমেদপুর স্টেশনেও রেল অবরোধ করা হয়েছে সকাল ১০টা ৫০ থেকে। যার কারণে হাওড়া মুখি বহু ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়েছে। বারসোই স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে হলদিবাড়ি-কলকাতা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। খুরিলাল স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ডাউন আগরতলা-শিয়ালদা কাঞ্জনজঞ্ঘা এক্সপ্রেস। অন্যদিকে সুদানি স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ডাউন গুয়াহাটি-সেকেন্দ্রাবাদ স্পেশাল। আরও পড়ুন: Protest In Bengal Against Citizenship Act: রবিবারও নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়, রাস্তা অবরোধ, জ্বলল আগুন
— Eastern Railway (@EasternRailway) December 15, 2019
২৪ ঘণ্টার খবর অনুযায়ী, নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে হওয়া বিক্ষোভে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনার পর রাতেই স্বাভাবিক হয়েছে হাওড়া-খড়গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল। টানা এগারো ঘন্টা ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকে ওই লাইনে। বিক্ষোভকারীদের হাঠিয়ে, ট্র্যাকের মেরামতির পর শনিবার রাত দশটা নাগাদ স্বাভাবিক পরিষেবা। তবে পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। পূর্ব রেলের জন সংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তি এক আবেদনে জানিয়েছেন, শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। কোনওভাবেই রেলের সম্পত্তি ধ্বংস করবেন না। বিক্ষোভের কারণে বিভিন্ন বিভাগে রেল চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষই অসুবিধা ভোগ করছেন। এমনকি নিরাপত্তা সংক্রান্ত রেলের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার কারণে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষ অসুবিধা ভোগ করছেন। ফলে সাধারণ মনুষের কাছে আবেদন রেল চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করুন। রেল সূত্রে খবর, রবিবারের হাওড়া-দিঘা তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস, কলকাতা-গুয়াহাটি গরিবরথ এক্সপ্রেস, হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, আজিমগঞ্জ হাওড়া এক্সপ্রেস, হাওড়া কাটিয়ার এক্সপ্রেস, শিয়ালদহ সহর্ষ হাটেবাজারে এক্সপ্রেস, হাওড়া আলিপুরদুয়ার তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস, কলকাতা রাধিকাপুর এক্সপ্রেস, কামরূপ এক্সপ্রেসের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে।