কলকাতা, ৩০ মার্চ: লকডাউনে (Lockdown) স্তব্ধ দুনিয়া। জরুরি অবস্থায় মিলছে না রক্তও। এমনই জরুরি অবস্থায় বৃদ্ধার প্রাণ বাঁচালেন পুলিশ অফিসার।কলকাতা পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখে- ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত অমিল, নিজেই রক্তদান করে গুরুতর অসুস্থ প্রৌঢ়ার প্রাণ বাঁচালেন বৌবাজার থানার অ্যাডিশনাল অফিসার-ইন-চার্জ। গতকাল, ২৯ মার্চ বৌবাজার থানায় যোগাযোগ করেন হালদার লেনের বাসিন্দা শ্রীমতী কণিকা মজুমদার।
কণিকা দেবী জানান, তাঁর ননদ কৃষ্ণা গুপ্ত গুরুতর অসুস্থতাজনিত রক্তপাতের কারণে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর দ্রুত এ-পজিটিভ (A+) ব্লাড গ্রুপের রক্ত প্রয়োজন। অবস্থা গুরুতর। কিন্তু হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, রক্তের অভাবের কারণে তারা এই মুহূর্তে এ-পজিটিভ রক্তের ব্যবস্থা করতে পারবে না। কণিকা দেবীর বয়স ৮০ পেরিয়েছে। পাশে সাহায্য করার মতো তেমন কেউ নেই। লকডাউন পরিস্থিতিতে সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই তিনি সাহায্য চেয়ে ফোন করেন বৌবাজার থানায়, যদি মানিকতলা সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্রয়োজনীয় রক্ত জোগাড় করে দেওয়া যায়। আরও পড়ুন, বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, ২২ জেলায় ২২ টি করোনা হাসপাতাল তৈরির ঘোষণা রাজ্য সরকারের
রক্তদাতার কার্ড নিয়ে দ্রুত কণিকা দেবীর বাড়িতে পৌঁছে যান বৌবাজার থানার সার্জেন্ট সৌরভ দাস। সেখান থেকে কণিকা দেবীর পরিচারিকা একজন মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন মানিকতলা সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কেও তখন যথেষ্ট পরিমাণে এ-পজিটিভ ব্লাড গ্রুপের রক্ত মজুত ছিল না। এদিকে কৃষ্ণা দেবীর অবস্থা সংকটজনক। দ্রুত রক্ত না পাওয়া গেলে প্রাণসংশয় হতে পারে। অন্য কোনও উপায় নেই দেখে এগিয়ে আসেন বৌবাজার থানার অ্যাডিশনাল অফিসার-ইন-চার্জ সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি। তাঁর ব্লাড গ্রুপও এ-পজিটিভ। তিনি নিজে মানিকতলা ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে রক্তদান করেন। সেই রক্ত যথাসময়েই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে। সংকট থেকে আপাতত মুক্ত হয়েছেন কৃষ্ণা গুপ্ত। এই সঙ্কটের পরিস্থিতিতে মানবিকতার জয়।