কলকাতা, ২৩ জানুয়ারি: আজ ২ টো ৪৫ নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে নামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) বিমান। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে তিনি যান রেস কোর্সে। রেস কোর্স থেকে যান নেতাজির (Subhash Chandra Bose) বাসভবনে। এরপর যান ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে। জাতীয় গ্রন্থাগারে নেতাজিকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে যান। সেখানে উদ্বোধন করেন ‘নির্ভীক সুভাষ’ নামে স্থায়ী একটি গ্যালারির। পাশাপাশি, অন্যান্য বিপ্লবীদের নিয়ে ‘বিপ্লবী ভারত’ নামে আর একটি গ্যালারিরও উদ্বোধন করেন। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যরা। এরপর সরকারি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন দুজনেই।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন:
- আত্মনির্ভর বাংলার সঙ্গে সোনার বাংলার প্রেরণা। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে বাংলাকে নেতৃত্ব দিতে হবে। সোনার বাংলা করতে হবে। আরও গৌরব বাড়াতে হবে। নেতাজির মতো আমাদেরও সংকল্পে না পৌঁছনো পর্যন্ত থামা উচিত নয়
- আজ দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তিনি দেখতেন দুনিয়ার বড় বড় কোম্পানিতে আজ ভারতীয়রা। রাফালের মতো বিমান ভারতের কাছে এসেছে। তেজস বানাচ্ছে ভারত। তিনি যদি দেখতেন তাঁর দেশের সেনা এত শক্তিশালী, আধুনিক হাতিয়ার পাচ্ছে, তাহলে ওঁর কেমন লাগত?
- এত বড় মহামারীর সঙ্গে পূর্ণশক্তিতে লড়াই করেছে দেশ, নেতাজি কীভাবে ভাবতেন? ভ্যাকসিন দুনিয়ার অন্য দেশকে সহযোগিতা করছে ভারত। কতটা গর্ব করতেন তিনি! যেখানেই থাকুন আশীর্বাদ করছেন। এলএসি থেকে এলওসি- শক্তিশালী ভারতকে দেখছে দুনিয়া। ভারতকে চ্যালেঞ্জ করলে কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে ভারত
- আজ আমাদের কাছে উদ্দেশ্য ও শক্তি আছে। নেতাজি বলেছিলেন, আজ আমাদের কেবল একটা ইচ্ছে থাকা উচিত। আমাদের ভারত বেঁচে যেতে পারে। দেশের জন্য বাঁচি, এটাই আমাদের লক্ষ্য। পরিশ্রম ও উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশকে আত্ননির্ভর বানাতে হবে। দুনিয়ার জন্য উচ্চমানের পণ্য তৈরি করতে হবে। স্বাধীন ভারতের স্বপ্নে আস্থা হারিয়ো না। দেশে এমন কোনও শক্তি পরাধীনতার শৃঙ্খলায় বেঁধে রাখবে। সত্যিই দুনিয়ায় এমন কোনও শক্তি নেই, ১৩০ কোটি দেশবাসীকে আত্মনির্ভর ভারত তৈরিতে বাধা দিতে পারে
-
নেতাজি বুঝেছিলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আবহে বাইরে থেকে ইংরেজদের দুর্বল করা যাবে। এই সময়ে ভাইজি ইলাকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পাঠিয়েছিলেন। বলেছিলেন, মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে এসো। দেশের বাইরে ভারতীয় সমর্থকদের একজোট করতে চেয়েছিলেন। আমরা একটা কাজ করতে পারবে। আজ সব ভারতীয় হৃদয়ে হাত রেখে বলুন। আমার একটা কাজ করতে পারবে? এই কাজ, এই লক্ষ্য আজ ভারতকে আত্মনির্ভর করার।
- হাওড়া-কালকা মেলের নাম করা হয়েছে নেতাজি এক্সপ্রেস। প্রতিবছর এবার থেকে নেতাজির জন্মদিন পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন করব। পরাক্রমের প্রতিমূর্তি ও প্রেরণা নেতাজি।
- আমার কাছে আবেগঘন মুহূর্ত। ছোটবেলা থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের নাম কানে আসতেই শক্তি পেতাম। ১২৫ বছর আগে দাসত্বের অন্ধকারে চেতনার জন্ম হয়েছিল। দুনিয়ার শক্তিশালী শাসককে বলতে পেরেছিলেন, আমি তোমার কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইব না। ছিনিয়ে নেব। আজকের দিনেই নেতাজি সুভাষের জন্ম হয়নি, আত্মগৌরবের জন্ম হয়েছিল। ১২৫তম জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে প্রণাম করছি। বালক থেকে ত্যাগ ও তপস্যার মাধ্যমে নেতাজি হয়েছিলেন এই ভূমিকে। আমি এই পুণ্যভূমিকে প্রণাম করছি।
- জয় হিন্দ, জয় হিন্দ, জয় হিন্দ।
- মঞ্চে উপস্থিত রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয়, ভারতের গৌরব আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্যদের পরিবার এবং বাংলার ভাইবোনেরা...
- আমি আজ নেতাজির চরণে প্রণাম করছি। আর প্রণাম করছি প্রভাদেবীকে, যিনি নেতাজির জন্ম দিয়েছেন। আজ ওই পবিত্র দিনের ১২৫তম বর্ষ।