Jawhar Sircar, Mamata Banerjee (Photo Credits: X)

আরজি কর-কাণ্ডের (RG Kar Hospital Incident) প্রতিবাদে এবার নিজের সাংসদ পদ ছাড়লেন জহর সরকার (TMC MP Jawhar Sircar)। রবিবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) এ বিষয়ে একটি চিঠি লিখেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। রাজ্যের বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি, আরজি করের ঘটনার শাসক দলের ভূমিকা- সমস্ত কিছু নিয়েই বেজায় অসন্তুষ্ট জহর। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা নিজের চিঠিতে সেই সমস্ত ক্ষোভের কথা উগড়ে দিয়ে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রবীণ সাংসদ। একদিকে আরজি করের ঘটনা ঘিরে রাজ্যবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে মমতার সরকারের উপর। এরই মধ্যেই শাসকদলের ব্যর্থতা চিহ্নিত করে সাংসদের ইস্তফা তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা দুই পাতার ওই চিঠিতে জহর (Jawhar Sircar) লিখেছেন, 'আমার এত বছরের জীবনে সাধারণ মানুষের এমন ক্ষোভ এবং সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ অনাস্থা আগে কখনও দেখিনি। গত এক মাস আমি ধৈর্য্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি আপনি কেন সেই পুরনো মমতা ব্যানার্জির মত ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না'। রাজ্য সরকারের 'অপরাজিতা বিল'এর প্রসঙ্গ টেনে জহর আরও বলেন, 'এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে তা এক কথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে'।

ইস্তফা তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের... 

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ এবং খুনের মত জঘন্য ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে রাজ্যবাসী। সুবিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন চিকিৎসক মহল, তারকা, নাগরিক সমাজ প্রত্যেকেই। যত দিন গিয়েছে প্রতিবাদের আগুন আরও তীব্রতর হয়েছে। তবে আরজি করের ঘটনায় প্রমাণ লোপাট, পুলিশের গাফিলতি, হাসপাতালে দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগও সমানতালে উঠে এসেছে। দুর্নীতির এই নানান চিত্রের মাঝেও সুবিচারের আন্দোলনকে বিরোধী দলের আন্দোলন বলে শুরু থেকে দাবি করেছেন মমতা এবং তাঁদের দলের নেতা মন্ত্রীরা। এমন প্রবণতার নিন্দা করে জহর চিঠিতে লেখেন, এমার বিশ্বাস এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ করছেন। অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবে না'।

দেশ তথা রাজ্যজুড়ে দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে নিজের অনড় অবস্থানের কথা স্পষ্ট করে চিঠিতে জহর সরকার জানান, কেবল তৃণমূল না, রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিদায় নিচ্ছেন তিনি।