কলকাতা, ৩ জানুয়ারি: ফিরে এল রবিনসন স্ট্রিটের স্মৃতি। একইরকম ঘটনা ঘটল বেহালার (Behela) পর্ণশ্রী (Parnasree) এলাকায়। মৃত বাবার পচাগলা (Decomposed) দেহ পাঁচদিন ধরে আগলে রইল ছেলে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। বছর পঁচাশির রবীন্দ্রনাথ ঘোষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত ছিলেন। গত রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর সঙ্গে থাকতেন ছোটো ছেলে অজিত ঘোষ (Ajit Ghosh)। বড় ছেলে আদি বাড়ি থেকে খানিক দূরে। সপ্তাহে একবার করে বাবার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন তিনি। বৃহস্পতিবার বাড়িতে ঢোকার মুখে পচা গন্ধ পান মৃতের বড় ছেলে। ঘরে ঢুকে দেখেন মাটিতে পড়ে রয়েছে বাবার পচাগলা দেহ। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি পর্ণশ্রী থানায় খবর দেন। পুলিশ এসেও গোটা বিষয়টি দেখে চমকে যায়। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পর্ণশ্রী থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, বড় ছেলে যখন বাড়িতে যান তখন অজিত ছিলেন না। দোকানে গেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, অজিত মানসিক ভারসাম্যহীন। কাজকর্ম করেন না। বাবার সঙ্গেই থাকতেন তিনি। মকলকাতা পুলিশের একজন সিনিয়র আধিকারিক জানান, মৃত রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বড় ছেলে অশোক কুমার ঘোষের কাছ থেকে তারা ফোন পেয়েছিল। তিনি বলেন, "মৃতদেহ দেখে মনে হয়েছে দিন পাঁচেক আগে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছিল। ছোটো ছেলে তাঁর বড় ভাইকে বিষয়টি জানাননি। তখন থেকেই তিনি মৃতদেহ নিয়ে বাস করছিলেন।" তিনি আরও বলেন, "অজিত খুব হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। মনে হয় বাবার মৃত্যুর কারণে তিনি ভেঙে পড়েন। তাই বাবার মৃতদেহ নিয়ে থাকতে শুরু করেন। বড় ভাইকেও জানাননি।" পুলিশ অজিতকে আটক করেছে এবং বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক আরও জানান, একজন মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিতে পারেন তাঁরা। আরও পড়ুন: US Strike At Baghdad Airport: বাগদাদ বিমানবন্দরে অ্যামেরিকার বিমান হামলা, নিহত ইরানের শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিসহ ৮
২০০৫ সালে ১০ জুন রবিনসন স্ট্রিটেও ঘটে এমনই এক ঘটনা। পার্থ দে নামে এক ব্যক্তি তাঁর দিদি ও দুটি কুকুরের কঙ্কালের সঙ্গে মাসের পর মাস ছয়েক কাটিয়ে ছিলেন। এমনকী সেই মৃতদেহকে খাবারও দিতেন তিনি। পার্থ দে কে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন্দর এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে পার্থর মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল।