কলকাতা, ৮ মে: আজ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন (Rabindra Nath Tagore Birth Anniversary)। বাঙালির লকডাউন রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন এই প্রথম। সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতেই চলছে উৎসবের আয়োজন। নাচ, গান, কবিতা আবৃতির মধ্যে দিয়ে সকাল শুক্রের সকাল হয়ে উঠেছে রবিময়। রবিকিরণের ছটা জ্বল জ্বল করছে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে। ভার্চুয়াল রবীন্দ্রজয়ন্তী- এও দেখার ছিল। আজ রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে সকাল সকাল রবিগুরুকে সম্মান জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee)। কবিগুরুর জন্মদিন উপলক্ষে টুইট (Tweet) করে পঁচিশে বৈশাখের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
চিরনূতনেরে দিল ডাক, পঁচিশে বৈশাখ…
বিশ্বকবি গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবসে শ্রদ্ধা ও প্রণাম
Homage to Kobiguru Rabindranath Tagore on his birth anniversary
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 8, 2020
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেবল গীতিকার বা সুরকার নন, তিনি ছিলেন সংগীতস্রষ্টা। ‘গগনের থালে রবি চন্দ্র দীপক জ্বলে’ গানটিই সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম রচনা। মাত্র ১১ বছর বয়সে এই গানটি লিখেছিলেন তিনি। এরপর প্রায় ৭০ বছর ধরে নিয়মিত গান রচনা করেছিলেন রবি ঠাকুর। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুকুমার রায়, হেমলতা দেবীর রচিত বেশ কয়েকটি গানে নিজে সুরও দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শুধু ভারত এবং বাংলাদেশ নয়, শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতও রবীন্দ্রনাথের লেখা। ১৮৭৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে যান রবীন্দ্রনাথ। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন শেকসপিয়র ও অন্যান্য ইংরেজ সাহিত্যিকদের রচনার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটে। অবশেষে ১৮৮০ সালে প্রায় দেড় বছর ইংল্যান্ডে কাটিয়ে কোনো ডিগ্রি না নিয়ে এবং ব্যারিস্টারি পড়া শুরু না করেই তিনি দেশে ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন, রবি গল্পে পাঁচ সেরা ছবি, দেখে নিন একনজরে
১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর ঠাকুরবাড়ির কর্মচারী বেণীমাধব রায়চৌধুরীর মেয়ে ভবতারিণীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মৃণালীনি দেবী। ১৯০৫-র ১৯ জুলাই, ব্রিটিশ শাসনাধীনে দেশ তখন উত্তাল। ততদিনে ইংরেজদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ঘাঁটি হয়ে উঠেছে বাংলা অর্থাৎ বাংলা, বিহার, অসম, শ্রীহট্ট। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবরে তৎকালীন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের লর্ড কার্জনের আদেশে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করা হয়। বাংলা বিভক্ত করে ফেলার ধারণাটি অবশ্য কার্জন থেকে শুরু হয়নি। ১৭৬৫ সালেরপর থেকেই বিহার ও উড়িষ্যা বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে সরকারী প্রশাসনিক এলাকা হিসেবে বাংলা অতিরিক্ত বড় হয়ে যায় এবং ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব ঘোষণা করেন। ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাকে দু’ভাগ করে কঠোরভাবে শাসন-শোষণ করার জন্য। হিন্দু জনসংখ্যার আধিক্য যেখানে সেই এলাকাগুলিকে আলাদা করা হবে মুসলিম অধ্যুষিত বাংলা থেকে।
ঘটনাচক্রে বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব দেওয়া হয় ১৬ আগস্ট, আর সেদিন ছিল রাখী পূর্ণিমা। হিন্দু ঘরে বোনেরা ভাইয়ের হাতে রাখি পরায়, সেসময় রবি ঠাকুরের মাথায় আসে অভিনব চিন্তা।হিন্দুদের উৎসব রাখীবন্ধন হয়ে উঠল হিন্দু-মুসলিমের সম্প্রীতির উৎসব।