৭ মে,২০১৯: ভাইপো বলেই ডাকেন। চতুর্থদফার ভোটের দিন তাই ভাইপো যখন নিচুপট্টির বাড়িতে এলে হাজির হল ফিরিয়ে দেননি কাকা। পদ্মবনে নাম লেখালেও ভাইপোকে কাছে ডেকেই বসিয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল(Anubrata Mandal)।
—‘বোস, এখানেই খেয়ে যা, কোনও অসুবিধা নেই।
তাহলে কি অনুব্রত নকুলদানা দিতে চাইলেন? না ! বরং বললেন,
—ও ছোট্ট একটা ভুল করে ফেলেছে। চাইলে আবার ফিরিয়ে নেব তৃণমূলে। কোনও অসুবিধা নেই। রাজ্য সভার পদ তো খালিই রয়েছে’
কাকার কথা শুনে কোনও রকম দ্বিধা না রেখেই বিজেপির উত্তরীয় গলায় হাসি মুখে পাশে গিয়ে বসলেন বোলপুরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা(Anupam Hazra)। তৃণমূলের পার্টি অফিসে পেটভরে খেয়ে অনুপম বললেন, ‘অনেক দিনের সম্পর্ক। রাজনীতিক উর্ধ্বে। আর দলে ফেরা? সেটা সময়ই বলবে।’
কাকা–ভাইপোর পুণর্মিলন কী ঘটবে? তার ইঙ্গিত অনুব্রতই দিয়ে রাখলেন। কারণ দলে একধরে হওয়ার পর মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে হাইপ্রোফাইল যাদবপুর (Jadavpur)কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন অনুব্রত। কিন্তু কোথাও যেন একটা ক্ষোভ রয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিজেপির (BJP)নেতারা দলবদলুদের প্রার্থী করা নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট নন। এই নিয়ে দলের অন্দরেই ক্ষোভ রয়েছে। বারাসত কেন্দ্রে সায়ন্তনের মনোনয়ন জমা না দেওয়া সেই কোন্দল প্রকাশ্যে এনেছে। অনুব্রতর সঙ্গেও ঠিক বোঝাপড়া হয়ে উঠছে না দলীয় নেতাদের। এই পরিস্থিতিতে অনুব্রতর বাড়িতে দেখা করতে আসা এবং তৃণমূলের পার্টি অফিসে বসে কব্জি ডুবিয়ে অনুপমের ভাত খাওয়াটা যে নিছক রাজনৈতিক সৌজন্য নয় সেটা বুঝতে বাকি নেই কারোর। তবে যতক্ষণ না পাকাপাকি সিদ্ধিন্ত হচ্ছে ততক্ষণ কিছু না বলাই ভাল।
অনুপমের এই পদক্ষেপ বিজেপি শিবিরে কী প্রভাব ফেলবে সেটা বলাই বাহুল্য। বিশেষ করে মুকুল রায়ের ভাবমূর্তি যে বিজেপিতে অনেকটাই নষ্ট হবে তা বোঝাই যাচ্ছে।
আবার অনুপমের এই পদক্ষেপে অনেকেই অন্য সমীকরণ দেখছেন। অনুপমের বিজেপিতে যোগদানের পিছনে মমতার কোনও অন্তর্ঘাত কাজ করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা। অনুপমকে বিজেপিতে যোগ দিতে বলে পদ্মশিবির দুর্বল করার দুর্ধর্ষ পরিকল্পনাও হতে পারে এটি। সেকাণেই ঠিক শেষ তিন দফা ভোটের আগে অনুপম হাজির হয়ে গিয়েছেন অনুব্রতর ডেরায়। যাতে ধাঁ ধাঁ লেগে গিয়েছে পদ্মশিবিরের।