সিউরি, ৩০ ডিসেম্বর: নিজের জেলা ছাড়া অন্য কোনও জেলার রাজনৈতিক দলের (তৃণমূল কংগ্রেস) সভাপতির নাম কে কতটা মনে রাখেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁর নাম 'এক্সেপ্সহনাল।' সবাই তাঁর নামের সঙ্গে 'পদ' সমান উৎসাহে মনে রাখে। বীরভূমের (Birbhum) রাজনীতি মানেই তিনি সামনের সারির সামনে থাকা মানুষ। তিনি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। বীরভূমের জেলা সভাপতি হিসেবে যাকে রাজ্যের সবাই অন্তত এক ডাকে চেনে। এই খ্যাতি অবশ্যই তাঁর রাজনৈতিক কুশলতার কারণে অর্জন করা। তাছাড়া দেখতে গেলে আরও একটা কারণ অবশ্য আছে। আর সেটা হল তাঁর 'বাক্যবাণ।' কথা বলায় তিরের মত শব্দ প্রয়োগ তাঁকে বরাবরই সমালোচনার শীর্ষে স্থান করে দিয়েছে। চলতি সিএএ-এনআরসি-এনপিআর নিয়ে অবশ্য তাঁকে মুখ খুলতে শোনা যায়নি। কিন্তু এবার মুখ খুললেন তিনি। আর মুখ খুলতেই তাঁর বাক্যের ছটায় সঙ্গী হল বিতর্ক।
রবিবার বীরভূমের পাইকরে নাগরিকত্ব আইন (CAA) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (NRC) বিরোধিতা করতে গিয়ে অনুব্রত বলেন, 'বাড়িতে সার্ভে করতে গেলে তাদের ঝাঁটাপেটা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে আপনাদের চিন্তা করতে হবে না। বাড়িতে যদি কেউ আসে আপনার ও আপনার পরিবারের বিস্তারিত সবকিছু জানতে, তাহলে ঝাঁটাপেটা করবেন।' কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আগাগোড়া বলে আসছিল, নাগরিকত্ব কেন্দ্রীয় তালিকার বিষয়। এ সংক্রান্ত আইন বা কোনও প্রক্রিয়া না মানার এক্তিয়ার নেই কোনও রাজ্যের। কিন্তু মমতা সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এনপিআর স্থগিত করার পর এবং আরও কয়েকটি রাজ্য থেকে বিরোধিতার আভাস পেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক 'বিকল্প পথ' খোঁজার চেষ্টা শুরু করেছে। আরও পড়ুন: Maharashtra Cabinet Expansion: আগামীকাল মহারাষ্ট্রের বাকি মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ, চমক দিয়ে উপ মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন অজিত পাওয়ার
এই সময়ের খবর অনুযায়ী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের (Home Ministry) সূত্র জানাচ্ছে, এনপিআর-এনআরসি'র গোটা প্রক্রিয়া, আবেদনের বিষয়টি সারা হতে পারে অনলাইনে। তাতে স্থানীয় স্তরে সরকারি কর্মীদের কাজে লাগানোর প্রয়োজন পড়বে না। যদিও এই বিষয়টি এখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের 'ভাবনা'র স্তরে রয়েছে। সংবিধানের ১৩১ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে শুনানির দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)। সে পথে রাজ্যগুলি হাঁটুক বা না হাঁটুক, রাজ্যকে এড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে এনপিআর-এনআরসি'র পুরো প্রক্রিয়া কেন্দ্র সরাসরি নিজেদের হাতে তুলে নিলে যুক্তরাষ্ট্রীয়তার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না বলে মনে করছেন বিরোধীরা। এতে ভিন্নমতের অধিকার, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধূলিসাৎ হওয়ার আশঙ্কাই করছেন অনেকে।