Kai and Saya Sakakibara (Photo Credit: @AndrewNJHawkins/ X)

ভয় কে জয় করা কাকে বলে সেটি অস্ট্রেলিয়ার সাকাকিবারা পরিবার এক ভয়ঙ্কর উপায়ে সত্য প্রমাণ করেছে। তিন বছর বয়স থেকে, অস্ট্রেলিয়ার কাই সাকাকিবারা (Kai Sakakibara) বিএমএক্স চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তিনি পরিবারের একমাত্র এই ইভেন্টের প্রতিভা ছিলেন না। দূরে দাঁড়িয়ে ছোট বোন সায়া সাকাকিবারাও (Saya Sakakibara) সেটি শেখার স্বপ্ন বুনছিল। ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকের আগে নাইন নেটওয়ার্ককে কাই বলেছিলেন, 'তাকে (সায়া) কেবল টেনে নিয়ে যাওয়া হত, সে কেবল আমার কারণে এটি করেছে।' চার বছর বয়সে থেকে সায়াও সাইক্লিং শুরু করে এবং দ্রুত জাতীয় খেতাবের দিকে তার র‍্যাঙ্ক লাফিয়ে উঠতে থাকে। সাকাকিবারা পরিবারে দুজন বড় ক্রীড়া তারকায় তখন গর্বিত। ২০২০ অলিম্পিকের ঠিক আগে, কাই এবং সায়া উভয়কেই শক্তিশালী পদকের দাবিদার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তখনই এই ভাইবোনের টোকিওতে প্রতিযোগিতা করার স্বপ্নে এক ট্র্যাজেডি এসে ধাক্কা দেয়। Wedding Proposal in Paris Olympics 2024: দেখুন, অলিম্পিকে ব্যাডমিন্টনে সোনা জিতেই চিনা খেলোয়াড় পেলেন সতীর্থের থেকে বিয়ের প্রস্তাব

ক্যানবেরায় বিএমএক্স সাইক্লিং বিশ্বকাপের একটি ইভেন্টে কাই পড়ে যান এবং মাথায় গুরুতর আঘাত পান। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তার মস্তিষ্কের উপর চাপ কমাতে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। কাইকে মেডিক্যালি ইনডিউসড কোমায় রাখা হয় এবং জানানো হয় পরের দুই মাস তিনি এভাবেই থাকবেন। এমনকি চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তিনি বাঁচবেন বলে তারা নিশ্চিত নন। কাইকে পরে লিভারপুল হাসপাতালের ব্রেইন ইনজুরি রিহ্যাব ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়, তখন তিনি কথা বলতে, হাঁটতে বা বিছানা থেকে উঠতে পারছিলেন না। এই বিষয়ে কাই পরে বলেন,'আমি দুই মাস কোমায় কাটিয়েছি, সায়া আমার পাশে দুই মাস কাটিয়েছিল। আমি যখন প্রথমবার চোখ খুলি, যখন আমি প্রথমবার আমার হাত নাড়ায়, যখন আমি উঠে দাঁড়ায় তখন সে আমায় চিয়ার করে।'

এদিকে, সায়া টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচিত হন এবং প্রতিনিধিত্ব করতে যান। কাই একটু সুস্থ হলে প্যারালিম্পিক টর্চ রিলের একটি অংশের জন্য মশাল বহন করেন। সায়া টোকিওতে এই ইভেন্টে অংশ নেন কিন্তু কিছু করতে না পেরে পুরোপুরি খেলাধুলা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেন, তবে শেষ পর্যন্ত নিজেকে প্যারিস অলিম্পিকে আরেক সুযোগ দেন। শুক্রবার রাতে নিজের বিএমএক্স সাইকেলে চড়ে অলিম্পিক গৌরব অর্জন করতে করতে আনন্দাশ্রু ঝরিয়েছেন সায়া। তিনি প্রথম অস্ট্রেলিয়ান বিএমএক্স রেসার যিনি অলিম্পিক সোনা জিতেছেন। পদক পেয়ে জড়িয়ে ধরেন দাদা কাইকে, এ যেন সিনেমার গল্পের হ্যাপি এন্ডিং।