![](https://bnst1.latestly.com/wp-content/uploads/2020/07/36-1-380x214.jpg)
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যুদিন আজ, তিনি ছিলেন সমাজ সংস্কারক। বিধবা বিবাহ, স্ত্রীশিক্ষার প্রচলন করেছিলেন বিদ্যাসাগর, অন্যদিকে বহুবিবাহ ও বাল্য বিবাহের মতো সমাজের কঠিন নিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ছোটবেলায় পাড়ার মেয়ে রাইমণিকে দেখে বিধবা বিবাহের বিষয়টি তাঁর মাথায় আসে। কারণ খুব ছোটবেলায় রাইমণির স্বামী মারা যায়। এক সন্তানকে নিয়ে সে ফিরে আসে বাপের বাড়ি। এরপর রাইমণির বিধবা জীবনের কষ্ট দেখতে দেখতে দু:সহ হয়ে উঠছিল বিদ্যাসাগরের কাছে। তখন থেকে বিধবাদের আবার বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শুরু করেন পড়াশুনা। অবশেষে ফেলে সাফল্য। সমস্ত প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই বিধবাবিবাহ আইন পাস হল।
বিধবা বিবাহের জন্য এরপর তোরজোড় শুরু করেন বিদ্যাসাগর। আইন পাস হওয়ার পর নিজে থেকেই বেশ কিছু বিধবাবিবাহ নিজের হাতে সম্পন্ন করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র। অন্যদিকে, দরিদ্র, আর্ত, নিপীড়িত মানুষের প্রতি তাঁর হাত ছিল উদার, বিদ্যাসাগরের বাড়ির দোরগোড়া থেকে কেউ খালি হাতে ফিরে যেতেন না। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে তাই বলা হত 'দয়ার সাগর'। চরম আর্থিক সঙ্কটেও ঋণ নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি একাধিকবার।
ঈশ্বরচন্দ্রের আসল নাম ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সংস্কৃত ভাষা এবং ইংরেজি ভাষায় অগাধ পাণ্ডিত্যের জেরে বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের ঈশ্বরচন্দ্রের স্মৃতিরক্ষায় তৈরি হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। কলকাতার আধুনিক স্থাপত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন বিদ্যাসাগর সেতু নাম পরিচিত। বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রয়াত হন ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই কলকাতার বাদুড়বাগানস্থ বাসভবনে। চিকিৎসকদের মতে, লিভারের ক্যান্সারে ৭০ বছর বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।