রাত পেরোলেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তবে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন কীভাবে  স্বীকৃতি পেল বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের। সেই গল্প জেনে নেব এক নজরে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ঃ

আব্দুস সালাম এবং রফিকুল ইসলাম নামে কানাডায় বসবাসকারী দুই বাঙালি ভাষাপ্রেমী ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে  রূপায়িত করার জন্য ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের মহাসচিব কোফি আন্নান-এর কাছে আবেদন জানান।বিষয়টি সেইসময়ের সেক্রেটারি জেনারেল পদে কর্মরত ফিরদৌস-এর নজরে আসে। তিনি সালাম ও রফিকুলকে জাতিসংঘের অন্য কোনো সদস্যরাষ্ট্রের কাছ থেকে তাদের প্রস্তাবের সমর্থন আনার জন্য অনুরোধ করেন।

এই ঘটনার পরে রফিকুল, সালামকে নিয়ে “মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড” নামক একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই সংগঠনে বিভিন্ন ভাষার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে সমস্ত সদস্যরা মিলে কোফি আন্নানকে চিঠি লেখেন। চিঠির লেখার মূল লক্ষ্য ছিল ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করা। চিঠিটির একটি কপি ইউনাইটেড নেশনস অর্গানাইজেশন (UNO)-এর কানাডীয় দূত ডেভিড ফাওলারের কাছে ও পাঠানো হয়।

১৯৯৯ সালে চিঠির বিষয় নিয়ে ইউনেস্কো-র (ইউনাইটেড নেশনস এডুকেশন, সাইন্টিফিক এণ্ড কালচালার অর্গানাইজেশন) আনা মারিয়ার সাথে ফাওলারের বৈঠক হয়। মারিয়া তাদের পরামর্শ দেন এই প্রস্তাবের সমর্থনে আরও পাঁচটি দেশকে এগিয়ে আসতে হবে। এই পাঁচটি দেশ হলো ভারত, ফিনল্যান্ড, বাংলাদেশ, কানাডা এবং হাঙ্গেরি। পরে ২৯ টি দেশ প্রস্তাবটির সমর্থন জানানোর জন্য এগিয়ে আসে।

ফলস্বরূপ ১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বর ইউনেস্কো-র প্যারিস অধিবেশনে ১৮৮ টি দেশ প্রস্তাবটিকে সমর্থন প্রদান করে। এই অধিবেশনে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়।এরপর ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর মাতৃভাষা দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলি দ্বারা যথেষ্ট সম্মানের সাথে পালিত হচ্ছে।