হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে, পৃথিবীতে যখনই সন্ত্রাসীদের অত্যাচার বেড়েছে, তখন তাদের দমন করার জন্য পৃথিবীতে নতুন অবতারে এসেছেন ভগবান বিষ্ণু। একসময় পৃথিবীতে ঋষি ও নাগরিকদের ওপর অত্যাচার বাড়তে থাকে শক্তিশালী রাক্ষস হিরণ্যক্ষের, তখন বরাহ অবতার নিয়ে তাকে হত্যা করে পৃথিবীতে নিরাপত্তা, ভারসাম্য ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন ভগবান বিষ্ণু। বিশ্বাস অনুসারে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়ায় বরাহ রূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন শ্রী হরি, তাই এই তিথিতে অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করা হয় বরাহ জয়ন্তী। ২০২৪ সালে বরাহ জয়ন্তী পালন করা হবে ৬ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার।
২০২৪ সালে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষ তৃতীয়া শুরু হবে ০৫ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার, দুপুর ১২:২১ মিনিটে এবং শেষ হবে ০৬ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার, বিকাল ০৩:০১ মিনিটে। উদয় তিথি অনুসারে, বরাহ জয়ন্তী পালন করা হবে ৬ সেপ্টেম্বর। পুজোর শুভ মুহুর্ত থাকবে ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ০১:৩৫ মিনিট থেকে বিকাল ০৪:০৬ মিনিট পর্যন্ত। বরাহ জয়ন্তীতে পুজো করা হয় ভগবান বিষ্ণুর। এই দিনে ব্রহ্মমুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে পরিষ্কার পোশাক পরে মন্দিরে ভগবান বরাহের ছবি সহ ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি স্থাপন করা হয়। এরপর গঙ্গাজল দিয়ে প্রতিমাকে স্নান করিয়ে পুজো করা হয়। ভগবানকে অর্পণ করা হয় হলুদ ফুল, তুলসী পাতা, অক্ষত, হলুদ, মৌলি, চন্দন, সুপারি। পুজো শেষে ভগবান বিষ্ণুর আরতি করে বিতরণ করা হয় প্রসাদ।
ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষ তৃতীয়া তিথিতে ভগবান বিষ্ণুর তৃতীয় অবতার বরাহ রূপের স্মরণে পালন করা হয় বরাহ জয়ন্তী। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, সমগ্র মহাবিশ্বকে সাগরে নিমজ্জিত করার চেষ্টা করেছিলেন শক্তিশালী রাক্ষস হিরণ্যক্ষ, তখন শক্তিশালী বরাহ রূপে অবতারণা করেছিলেন ভগবান বিষ্ণু এবং মহাবিশ্বকে রক্ষা করেছিলেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ন্যায়পরায়ণতা, সাহস ও বিশ্বাস বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয় বরাহ জয়ন্তী উৎসবে। অন্যায়ের ওপর ধর্মের জয় এবং অন্যায়ের ওপর ন্যায়ের প্রতিফলন হল এই উৎসব। বিশ্বাস করা হয় যে বরাহ জয়ন্তীর পুজো করলে অশুভ শক্তি ও শত্রুদের বিনাশ হয় এবং পরিবারে সুখ ও শান্তি আসে।