Theme of Jagadhatri Pujo at chandannagar (Photo Credit: X@ieBangla)

একটি আস্ত গ্রাম এবং সেই গ্রামের গ্রামবাসীদের জীবন জীবিকা নিয়ে থিম করে এবার জগদ্ধাত্রী পুজোয় তাক লাগিয়ে দিতে চলেছে চন্দননগর মনসাতলা বারোয়ারি,  এবার তাঁদের পুজো ৬৪ বছরে পড়লো। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানার অন্তর্গত একটি ছোট্ট ছবির মতো গ্রাম বনকাপাসি। এখন সবাই শোলা শিল্প গ্রাম নামে একডাকে চেনে। এই গ্রামের শোলা শিল্প দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে পাড়ি দিচ্ছে আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশে। একটুকরো শোলা। ছুরি দিয়ে কেটে তাতেই ফুটে উঠছে অমূল্য শিল্পকর্ম।দেবদেবী, মনিষীদের অবয়ব থেকে বিভিন্ন কারুকার্যের অপূর্ব শিল্পকলা।

দেবীর মুকুট, ডাকের সাজ সব কিছুর জন্যই পুজো কমিটির কর্তারা এই গ্রামের শরণাপন্ন হন। চলতি বছরের শুরুতে ওই গ্রামে প্রতিমার চালচিত্র ও মুকুটের বায়না দিতে গিয়ে অবাক হয়ে যান মনসাতলা বারোয়ারি র কর্মকর্তারা। গ্রামের প্রতিটা বাড়িতেই আট থেকে আশি পুরুষ মহিলা সবাই শোলা নিয়ে কাজ করছেন। নিজেদের খড়ের ছাউনি বাড়ি।হতদরিদ্র মানুষগুলি সবাই যেন শিল্পী। কি অসাধারণ তাঁদের কাজ! তখনই তাঁরা ঠিক করেন এদের গ্রাম নিয়েই তাঁরা একটি থিম করবেন। জগদ্ধাত্রী পুজোর পঞ্চমীর মধ্যেই তাঁরা তাঁদের মণ্ডপ প্রস্তুত করে ফেলেছেন। রাস্তা থেকে পুজো মণ্ডপে যেতে গেলে মূল যে গেট টি,সেটি অবিকল বন কাপাসি রেল স্টেশনের আদলে তৈরি। স্টেশন থেকে নেমে গ্রামে প্রবেশ। দুধারে দেওয়ালে 'ডাকের ইতিকথা' র ইতিহাস। প্রায় পনেরো জন বিভিন্ন বয়সী ডাকের সাজের (শোলা) শিল্পী র ছবি। তাঁরাই মূলত এই মণ্ডপসজ্জার মূল কারিগর। এর মধ্যেই টুকরো টুকরো করে কোলাজ। মূল মণ্ডপে প্রবেশের মুখে দেখানো হয়েছে কিভাবে পাট কাঠি থেকে শোলা উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ কাঁচামালের উপাদান সামগ্রী। এবার মণ্ডপে প্রবেশ। অপূর্ব শোলার কাজ চারিদিকে, স্বয়ং মা জগদ্ধাত্রীও যেন অবাক চোখে দেখছেন এই অপরূপ শিল্পকলা।

বারোয়ারির সম্পাদক লাল্টু সরকার "আমরা তুলে ধরেছি সেই সব শিল্পীদের, তাঁদের জীবনযাত্রার মান, তাঁদের হাতের কাজ, যাঁরা থাকেন প্রদীপের অন্ধকারে অথচ তাঁদের হাত দিয়েই প্রদীপ জ্বলে।