কানপুর, ১৯ মে: উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়া-য় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কুয়োর মধ্য থেকে উদ্ধার হয়েছিল কানপুরের এক হাসপাতালে কর্মরত নার্সের দেহ। নার্সের রহস্যজনক মৃত্যুতে সেই সময় বেশ তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। কিছুতেই কিনারা করা যাচ্ছিল না কী করে তিনি খুন হয়ে ছিলেন। দীর্ঘ ৬ বছর পর শালিনী তিওয়ারি নামের সেই নার্সের হত্যা রহস্যে বড় পর্দা উঠল। নার্সেকে গলা টিপে হত্যা করা ও তার দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে ইউপি পুলিশের হেড কনস্টেবল মনোজ কুমার-কে গ্রেফতার করা হল। সেই পুলিশ কর্তা কানপুর পুলিশ সদর দফতরে কর্মরত ছিলেন। বছর ৫০-এর বিবাহিত মনোজ কুমারের সঙ্গে সেখানেই পরিচয় ও প্রেম হয় কানপুরের নার্স শালিনীর।
শালিনী তাঁর এক বন্ধুর দুর্ঘটনার পর কানপুর থানায় যাওয়ার সূত্রে পুলিশ কর্তা মনোজ কুমারের পরিচয় হয়েছিল। সেই পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব, তারপর ঘনিষ্ঠতা-প্রেম। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে সবটা। ৫০ বছরের পুলিশ কর্তা মনোজ কুমার বিবাহিত ছিলেন। এদিকে, শালিনী তাদের বিয়ের ব্যাপারে জোর দিতে থাকে মনোজকে। পুলিশ কর্তা শালিনীকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন বলে দাবি। এরপরই দু জনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। শালিনীর হাত থেকে রেহাই পেতে মনোজ তাকে খুনের ছক কষেছিল। পরিকল্পনা মত ঠান্ডা মাথায় শালিনী-কে গলা টিপে খুনের পর, কানপুর থেকে ইটাওয়ায় বহন করে এনে তার দেহ কুয়োয় ফেলে দিয়েছিল সেই পুলিশ কর্তা।
খুনের পর শালিনীর ফোন নষ্ট করে দিতে তার মোবাইল সেটটা রাহুল কুমার নামের এক বন্ধুকে দেয় মনোজ। সেই বন্ধু শালিনীর মোবাইল ফোনটা অযোধ্যায় নিয়ে গিয়ে সিম কার্ড ভেঙে ফেলে। পুলিশ খুনের তদন্তে শালিনীর ফোনের শেষ লোকেশনের সূত্র ধরে বেশ কয়েকটা মাস অযোধ্যায় ক্লু খোঁজার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পরে যখন শালিনীর ফোনের কল রেকর্ডের বিস্তারিত তথ্য পায় পুলিশ, তখন তারা বড় সূত্র পায়। দেখা যায়, শালিনীকে ঘন ঘন ফোন করে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতেন পুলিশ কর্তা মনোজ কুমার। এরপরই তদন্তের জাল বিস্তার করে শেষ পর্যন্ত শালিনী-কে খুন করার অভিযোগে মনোজকে গ্রেফতার করে ইউপি পুলিশ।