Photo Credits: ANI

নতুন দিল্লি, ২৯ জুন: ভারতীয় রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র বলা হয় উত্তর প্রদেশ-কে। সবচেয়ে বেশী লোকসভা আসন থাকা ইউপি-কে নিয়ে বলা হয়, এই রাজ্য যার দেশের সিংহাসন তার। প্রবাদে যাকে বলে, ইউপি জিসকা, কুর্সি উসকা। এই যে গত দুটি লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী একাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়েছিলেন, তার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে বিজেপির দারুণ ফলের। এই কারণেই গুজরাট ছেড়ে উত্তর প্রদেশ থেকে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ৪০০ পাড় করে ক্ষমতায় আসবেন মোদী, এই অঙ্কের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল পদ্ম শিবিরের ইউপি-কে নিয়ে আত্মবিশ্বাস। বিজেপির হিসেব ছিল ২০২৪ লোকসভায় ইউপি-তে বিজেপি ও এনডিএ-র বাকি দলগুলিকে মিলিয়ে ৮০টি লোকসভার মধ্যে অন্তত ৭৫টি আসনে জিতবে। মোদী বারাণসী থেকে ৭৫ শতাংশ ভোট পেয়ে রেকর্ড মার্জিনে জিতবেন তেমন আত্মবিশ্বাসটাও ছিল বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। কিন্তু অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরি করার সাফল্যের প্রচার করা বিজেপি-র কাছে ইউপি ভোটের ফলে ঠিক উল্টো হল। সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস জোটের কাছে ধরাশায়ী হল মোদী-শাহ-র সব ইউপি কৌশল। যোগী রাজ্যে যেখানে অখিলেশ যাদব-রাহুল গান্ধীরা জিতলেন ৩৭টি আসনে, সেখানে বিজেপি জেতে ৩৩টি-তে। শুধু তাই নয়, অন্তত ১২টি আসনে বিজেপির জয়ের কারণ ছিল মায়াবতীর দলের ভোট ভাগ বসিয়েছিল সমাজবাদী-কংগ্রেসের ভোটে। বিজেপির ভোট প্রাপ্তির হার এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গিয়েছে।

পাশাপাশি যোগী রাজ্যে বিজেপি-র একেবারে নিশ্চিত আসনেও বিজেপি প্রার্থীদের জয়ের ব্যবধান একেবারেই কম ছিল। বারাণসী লোকসভায় নরেন্দ্র মোদীও একটা সময় পিছিয়ে থাকার পর দেড় লক্ষ ব্যবধানে জেতেন। যোগী আদিত্যনাথের গড় গোরক্ষপুরে যেখানে ২০১৯ লোকসভায় বিজেপির রবি কিষাণ জিতেছিলেন ৩ লক্ষাধিক ভোটে, সেখানে এবার তিনি জেতেন ১ লক্ষ ভোটে। গোন্ডা লোকসভায় বিজেপির কৃতি বর্ধন সিং ২০১৯ লোকসভায় জিতেছিলেন দেড় লক্ষাধিক ভোটে, সেখানে এবার তিনি জেতেন মাত্র ৪৬ হাজার ভোটে। উদাহরণ এরকম একাধিক আছে।

ইউপি-তে বিজেপির এই মহা বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে আরএসএসের রিপোর্টে মূলত তিনটি বিষয় উঠে এল। ১) দলিত ভোটারদের বিজেপির থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া, ২) রাজ্যের বেকারত্ব, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অত্যধিক বাড়ার পরেও দলের উদাসিন থাকা, ৩) সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিজেপি-র বড় নেতাদের অনেকের কানেকশন পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়া। যুবকদের কাছে টানতে এবার আরএসএস ইউপিতে তাদের সংগঠন আরও বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে।