ভুবনেশ্বর, ৩ অক্টোবর: কালো জাদু করেছে এই অজুহাতে জনা ছয়েক প্রৌঢ়ের উপরে নিদারুণ অত্যাচার চালাল গ্রামের বাসিন্দারা। অভিযোগ, পাথর মেরে তাঁদের দাঁত ভেঙে দেওয়া হল এমনকী, জোর করে মানুষের মলমূত্র (human excreta) খেতে বাধ্য করা হল ওই ছয়জনকে। এক টানা অত্যাচারে প্রৌঢ়ের দল যখন বেজায় কাহিল তখন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেল অভিযুক্তরা। এদিকে এই অত্যাচারের খবর পেয়েই আক্রান্তদের উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার (Odisha) গঞ্জাম গ্রামে। গ্রামে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় ছয় প্রৌঢ়ের উপরেই সন্দেহ জাগে বাকিদের। সবার ধারণা হয়, এই ছয়জনই কালো জাদু করেছে (Practicing Witchcraft), তাই গ্রামে মৃত্যু মিছিল শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গঞ্জাম গ্রামে সম্প্রতি তিনজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গত ছমাস ধরে পাঁচ জন বাসিন্দা গুরুতর অসুস্থ। কোনও ওষুধেই তাদের সেরে ওঠার লক্ষণ নেই। চিন্তিত বাসিন্দারা ধরে নেয় কেউ নিশ্চই কালো জাদু করছে তাই এই একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এরপরই পার্শ্ববর্তী গোপারপুর গ্রামের দিকে তাদের নজর পড়ে, সেখানকার ছয়জন প্রৌঢ়কেই তাদের সন্দেহ হয়। অভিযোগ, এরপরেই গঞ্জাম গ্রামের বাসিন্দারা শুরু করে চক্রান্ত। তারপর মঙ্গলবার বিকেলে দলবেঁধে গোপারপুর গ্রামে হানা দেয়। ওই প্রৌঢ়দের প্রায় জোর করেই বাড়ি থেকে টেনে বের করে আনা হয়। তারপর শুরু হয় হয়রানি। গঞ্জাম গ্রামের তিন মহিলার মৃত্যুর কারণ হিসেবে তাঁদেরই অভিযুক্ত করে। বলে, তাঁরা নাকি কালো যাদু করে ওই মহিলাদের মেরে ফেলেছেন ও বাকি পাঁচজনকে অসুস্থ করে রেখেছেন। মারধরের পর পাথর ছুঁড়ে তাঁদের দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়। জোর করে মানুষের মলমূত্র খাওয়ানো হয়। পরে তাঁদের বেহাল দশায় ফেলে পালায় অভিযুক্তরা। আরও পড়ুন-শিশুমৃত্যুর ঘটনায় নির্দোষ ডাক্তার কাফিল খানের কাছে ক্ষমা চাইলেন পরেশ রাওয়াল, কী বললেন তিনি?
Odisha: 6 men allegedly made to eat human excreta&their teeth pulled out by a group of villagers in Gopapur, Khallikote, on suspicion of practicing witchcraft. SP Ganjam says, "29 people arrested. Patrolling intensified to nab the remaining accused&avert any untoward incidents." pic.twitter.com/VzkrzWQfhO
— ANI (@ANI) October 3, 2019
পুলিশ খবর পেয়েই আক্রান্তদের উদ্ধার করে প্রথামে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এমকেসিজি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। হাসাপাতাল সূত্রের খবর, ছয় প্রৌঢ়ের শারীরিক অবস্থা এখন স্থীতিশীল। অন্যদিকে এই মারধর হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে ২৯জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ এদের মধ্যে ২২জনই মহিলা। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে শুরু হয়েছে তল্লাশি, এই সময় কোনওরকম আশান্তি এড়াতে গোটা গ্রামে চলছে পুলিশি টহলদারি।