প্রতীকী ছবি(File Photo)

বিজনোর, ২ অক্টোবর: এবার খুনির ভূমিকায় টিকটক ব্যবহারকারী, না কোনও গল্পের প্লট নয়। বাস্তবেই এমনটা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে। গত পাঁচদিনে সেখানে অন্তত তিনটি খুন হয়েছে। আর এই খুনের ঘটনার তদন্তে গিয়ে একজনকেই সন্দেহভাজনের তালিকায় রেখেছে পুলিশ। তিনি বিজনোরের বছর তেত্রিশের যুবক অশ্বিনী কুমার। অভিযোগ টিকটক ইউজার অশ্বিনী আসলে  মাদকাসক্ত। তিনি নিজে ফেসবুকে একটি উত্তেজনামূলক পোস্ট করে। তাতে নিজেকে ভিলেন হিসবে উল্লেখে করে অশ্বিনী। তার বক্তব্য, “আমি সবকিছু ধ্বংস করে দেব। শয়তান জেগে উঠেছে এবার আমার করা সর্বনাশ দেখুন।” এমনিতে অশ্বিনী কুমারের (Ashwini Kumar) নামে তেমন কোনও অপরাধের রেকর্ড ছিল না, তবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সেই ধারণা বদলে গিয়েছে।

ওই দিন বারহাপুর এলাকায় স্থানীয় বিজেপি নেতার ছেলে ও ভাইপোকে একেবারে দিনে দুপুরে গুলি করে অশ্বিনী। তারপর ভরা বাজারের মধ্যে পিস্তল হাতে তাণ্ডব করার পর উধাও হয়ে যায়। এর ঠিক তিনদিন পরে খানিকটা অবাক করে দিয়েই সে উদয় হয়, নিকিতা শর্মা (Nitika Sharma) নামে এক তরুণীর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে উধাও হয়ে যায় অশ্বিনী। নিকিতা স্থানীয় ছিলেন তবে কর্মসূত্রে দুবাইতে থাকতেন তিনি। সেখানে এক হোটেলে কাজ করতেন। সামনেই বিয়ে তাই বিজনোরের বাড়িতে ফিরেছিলেন। আগামী ২ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ের এক পুলিশকর্তার সঙ্গে তাঁর বিয়ের ঠিক ছিল। গুলিতে গুরুতর আহত নিকিতাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুদিন পর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। দৌলতাবাদে নিকিতার কাকার বাড়ি সেখানে প্রায়ই যেত অশ্বিনী। সেখানে নিকিতাকে প্রথম দেখে সে। ২০০২ সাল নাগাদ তাঁকে প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছিল অশ্বিনী, নিকিতা তৎক্ষণাৎ তা খারিজ করে দেন। এরপর চাকরি নিয়ে দুবাই চলে যান ওই তরুণী। এতদিন পর সে ঘটনা নিকিতার পরিবারের কেউই মনে রাখেননি। তবে এই গুলি চালানোর ঘটনা যে প্রতিশোধস্পৃহা থেকে তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। পুলিশের দাবি, নিকিতার বিয়ের খবর পেয়েই মুষড়ে পড়েছিল অশ্বিনী। তবে এই ঘটনার দিন দুয়েক আগে যে দুজনকে অশ্বিনী খুন করেছে তার কারণ এখন পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। আরও  পড়ুন-দেশের ব্যাংকিং পরিষেবা নিরাপদ ও স্থীতিশীল গুজবে কান দেবেন না, আতঙ্কিত গ্রাহকদের ভরসা ফেরাতে রিজার্ভ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি

অশ্বিনী নিজে গ্রাজুয়েট তাঁর বাবা ধামপুরের এক আখের সমবায়ে কেরানি ছিলেন, দাদা দেরাদুনের এক বেসরকারি ফার্মে কর্মরত। বিজনোরের এক ভদ্র পরিবারের সন্তান সে। দিল্লিরএকটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করছিল অশ্বিনী, সম্প্রতি সে কাজটা ছেড়ে চলে আসে। তার পরিবারের দাবি, মাদকাসক্তির কারণেই অশ্বিনী এসব ঘটাচ্ছে। গোটা বিজনোর জুড়ে অশ্বিনীকে খুঁজে বের করতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মীরা কাজ শুরু করেছেন। কেউ যদি অশ্বিনী সম্পর্কে সামান্যতম খবরও দিতে পারে তবে তাঁকে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রশাসনের তরফে এই ঘোষণাও হয়েছে। বিজনোরের এসপি সঞ্জীব ত্যাগী (Superintendent of Police Sanjeev Tyagi) জানিয়েছেন, অশ্বিনীকে ধরতে যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হ্য়ছে। তার ছবি পোস্টার সমস্ত থানায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে, অশ্বিনীর গতিবিধি টের পেলেই য়েন তাঁরা পুলিশে খবর।  দেন