মুম্বই, ১৯ ফেব্রুয়ারি: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে পুরোপুরি ঘেঁটে থাকা মহারাষ্ট্রের রাজনীতি জমে উঠেছে। এনডিএ ও ইন্ডিয়া-দুই শিবিরেই এখন আসন সমঝোতা নিয়ে ঘনঘন বৈঠক চলছে। কেউই কাউকে আসন ছাড়তে রাজি নয়, তবে জোট রাজনীতি মানেই তো সবাইকে কিছু কিছু ছাড়তে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, ছাড়তে পারি, কিন্তু কেন ছাড়বো। এই যেমন INDIA জোটের দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে জট এখনও কাটল না। মোটের ওপর ঠিক হয়েছে ইন্ডিয়া জোটের তিন দল-কংগ্রেস, এনসিপি (শরদ পাওয়ার), শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) কতগুলি করে আসনে লড়বে। কিন্তু কিছুতেই বিশেষ কয়েকটা আসন নিয়ে জট ছাড়ছে না। সবচেয়ে বড় জোট মুলত তিনটি জায়গায়-১) মুম্বইয়ের চারটি লোকসভা আসন, ২) গতবার যেখানে শিবসেনা ও কংগ্রেস বা এনসিপি-র মধ্যে সরাসরি লড়াই হয়েছিল, ৩) বিজেপি যেখানে বিরোধী ভোট এক হলে হারতে পারে। এর মধ্যে মুম্বইয়ের চারটি লোকসভা আসনেই লড়তে চান উদ্ধব ঠাকরে। বালা সাহেব ঠাকরের জাদু মুম্বইতে এখনও আছে। গতবার মানে ২০১৯ লোকসভায় বিজেপিকে বেশীরভাগ আসনে ছেড়ে দিয়েছিল জোট সঙ্গী শিবসেনা। তখনও উদ্ভব বনাম একনাথ শিন্ডের মধ্যে বিবাদ দল দু টুকরো হয়ে যায়নি।
ইন্ডিয়া বা মহাআঘড়ি জোটের বৈঠকে উদ্ভব ঠাকরে মুম্বইয়ের ৪টি সহ মহারাষ্ট্রের ১৮টি আসনে লড়তে চেয়েছেন। যেখানে গতবার শিবসেনা ১৯টি লোকসভা আসনে জিতেছিল। মহারাষ্ট্রে ৪৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেসকেই বেশী আসনে লড়তে দেখা যেতে পারে। অজিত পাওয়ার দলের প্রতীক নিয়ে যাওয়ার পর শরদ পাওয়ারের এনসিপিও বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় মহারাষ্ট্রে ইন্ডিয়া জোটের মূল শক্তি এখন কংগ্রেস। মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে কানপাতলে শোনা যাচ্ছে মারাঠা ভূমে মোদী ঝড় থামাতে বিরোধীদের তিনটি হাতিয়ার হল-১) শরদ পাওয়ার, ২) বালাসাহেবের পুত্র উদ্ভব ঠাকরেকে নিয়ে সহানুভূতি, ও ৩) মহারাষ্ট্রের এক অংশের আস্থার হাত চিহ্ন। শরদ পাওয়ার ও উদ্ভব ঠাকরদের এবারের লোকসভায় লড়তে হবে তাদের চেনা ঘড়ি ও তির ধনুক প্রতীক ছাড়াই। আরও পড়ুন-জোট জটের মাঝে আরও ১১টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা অখিলেশ যাদবের, মুখতার আনসারির ভাই আফজলকে দাঁড় করালেন গাজিপুরে
তবে শুধু INDIA-জোট নয়, বিজেপিকেও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অজিত পাওয়ার, একনাথ শিন্ডেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে বেগ পেতে হচ্ছে। মোদী-শাহ-রা মহারাষ্ট্রে অন্তত ৩৫টি আসনে লড়তে চাইছেন। কিন্তু অজিত পাওয়ার, একনাথ শিন্ডেরা চাইছেন তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে যত বেশী সম্ভব আসনে লড়তে। কারণে ভোটে না লড়লে খুব স্বাভাবিকভাবেই তাদের শিবির ছেড়ে পুরনো দলে ফিরে যাবেন তাদের অনুরাগীরা। এনডিএ-র কাছে চ্যালেঞ্জ হল থানে, মুম্বই, পুণে-র বেশ কিছু আসনে কারা প্রার্থী দেবে তা নিয়ে। দেবেন্দ্র ফড়নবিশ কিছুতেই অজি, একনাথদের মিলিয়ে ১০টার বেশী আসন ছাড়তে রাজি নন।