
সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন সরকারি কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা । বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এবং হিজবুল মুজাহিদিন (এইচএম) এর হয়ে কাজ করছিলেন। অভিযুক্তরা হলেন- পুলিশ কনস্টেবল মালিক ইশফাক নাসির, শিক্ষক আজাজ আহমেদ এবং শ্রীনগরের সরকারি মেডিকেল কলেজের জুনিয়র সহকারী ওয়াসিম আহমেদ খান। তিনজনকেই জেলে পাঠানো হয়েছে। পহেলগামে হামলার পর থেকেই নিরাপত্তা বেড়েছে উপত্যকায়। কেউ পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন কি না, সে সব খতিয়ে দেখতে নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার সেই তদন্তে এই তিন কর্মচারীর নাম উঠে আসে। এক জন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তার কথায়, ‘‘বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীরা পাকিস্তানের বিভিন্ন নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর হয়ে সক্রিয় ভাবে কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ। এঁরা পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারি বিভাগের পদে কর্মরত ছিলেন।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মালিক পেশায় পুলিশ কনস্টেবল। ২০০৭ সালে রাজ্য পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে মালিকের ভাই আসিফ নাসিরেরও একটি অস্ত্র চোরাচালান মামলায় নাম জড়িয়েছিল। ২০১৯ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত হন আসিফ। মালিক লশকর-এ-ত্যায়বার হয়ে অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং মাদক পাচারের কাজ করতেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ জোগাড় ও সরবরাহও করেছিলেন বলে অভিযোগ।
অন্য দিকে হিজবুলের হয়ে কাজ করা শিক্ষক আজাজ আহমেদ ২০১১ সালে স্কুল শিক্ষা বিভাগে যোগদান করেন এবং পুঞ্চ অঞ্চলে জঙ্গি কার্যকলাপের সহায়তায় সক্রিয় ছিলেন। পেশায় শিক্ষক আজাজ় হিজবুলের হয়ে কাজ করতেন। অভিযোগ, পুঞ্চে জঙ্গিদের অস্ত্র ও মাদক পাচারে সহায়তা করতেন তিনি।২০২৩ সালে, পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (POK)-ভিত্তিক হ্যান্ডলারের নির্দেশে অস্ত্র ও গোলাবারুদের একটি চালান সরবরাহ করার পথে নিয়মিত তল্লাশির সময় আজাজকে এর আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল সেই সময় তার কাছ থেকে হিজবুলের পোস্টারও উদ্ধার করা হয়েছিল।
জঙ্গিযোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ওয়াসিমেরও।ওয়াসিম খানকে ২০০৭ সালে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক নিযুক্ত করা হয়েছিল এবং তিনি শ্রীনগরের সরকারি মেডিকেল কলেজে জুনিয়র সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৮ সালে সাংবাদিক সুজাত বুখারি ও তাঁর দুই রক্ষীকে হত্যার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল শ্রীনগরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে সহকারী হিসাবে কর্মরত ওয়াসিমের। সেই ঘটনায় এখনও তদন্ত চলছে। তার মাঝেই এ বার তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করল সে রাজ্যের সরকার।
তিন জনকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।অভিযোগ, বরখাস্ত হওয়া তিন সরকারি কর্মী পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠী এবং -এর হয়ে কাজ করছিলেন। জঙ্গিদের কাছে নানা গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল তথ্যও পৌঁছে দিতেন অভিযুক্তেরা।