Frontier Highway Photo Credit: Twitter@ANI

বহু বছর ধরেই ভারতের অরুণাচল প্রদেশের উপর নজর রয়েছে চিনের। চলতি মাসে অরুণাচলের তাওয়াং সেক্টরে ইয়াংৎসে এলাকায় আগ্রাসন দেখিয়েছে লাল ফৌজ। তবে ভারতীয় সেনার তৎপরতায় বেজিংয়ের চোখরাঙানি প্রতিহত হয়েছে। এই আবহে ড্রাগনের দেশের উপর নজরদারিতে আরও শান দিতে এ বার নয়া কৌশল নিয়েছে মোদী সরকার।চিনের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় হাইওয়ে তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত সরকার। আগামী ৫ বছরের মধ্যেই অরুণাচলে তৈরি করা হবে ‘ফ্রন্টিয়ার হাইওয়ে’।আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ২০ কিমি দূরে এই সুদীর্ঘ হাইওয়ে তৈরি করা হবে। ভারত-তিব্বত-চিন-মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষে যাবে এই হাইওয়ে

হাইওয়ের মোট দৈর্ঘ্য হবে ১৭৪৮ কিমি। দুই লেনের রাস্তা তৈরি করা হবে। হাইওয়ে তৈরি করবে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক। সরকারি ভাবে এটাই ভারতের দীর্ঘতম হাইওয়ে।রাস্তাটির নামও ঠিক করা হয়েছে। নাম দেওয়া হবে ‘এনএইচ-৯১৩’। অর্থাৎ ৯১৩ নং জাতীয় সড়ক। এই দীর্ঘ হাইওয়ে তৈরি হলে সীমান্ত এলাকায় প্রতিরক্ষা বাহিনীর যাতায়াতের পথ আরও মসৃণ হবে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সীমান্ত এলাকায় যেতে সুবিধা হবে সেনার।

সাম্প্রতিক কালে যে ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায় চিনা সেনা আগ্রাসন দেখাচ্ছে, তা মোকাবিলায় এই রাস্তা গুরুত্বপূর্ণ।অরুণাচলের বমডিলা থেকে শুরু হবে এই জাতীয় সড়ক। তার পর নাফরা, হুরি, মনিগংয়ের মধ্যে দিয়ে যাবে রাস্তাটি। যা ভারত-তিব্বত সীমান্তের কাছাকাছি।চিন সীমান্ত লাগোয়া এলাকা জিডো ও চেনকুয়েন্টির মধ্যে দিয়েও রাস্তাটি যাবে। জাতীয় সড়ক শেষ হবে বিজয়নগর এলাকায়। যা ভারত-মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া এলাকার কাছে।

এই দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক তৈরি করতে খরচও হবে অনেক। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের জন্য খরচ হবে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। তবে এই প্রকল্পের খরচ কমানো যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে সরকার।এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, মোট করিডরের প্রায় ৮০০ কিমি যাবে মাঠের উপর দিয়ে। সুড়ঙ্গ ও সেতুও থাকবে বেশ কয়েকটা।

শীতকালে ভারী তুষারপাতের কারণে যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়ায় দুটি সুড়ঙ্গ  - সেলা এবং নেচিপু র  নির্মান কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রজেক্ট ভর্তকের চিফ ইঞ্জিনীয়ার ব্রিগেডিয়ার রমন কুমার।

রাস্তা তৈরি কাজে অনুমোদনের কাজ ২০২৪-২৫ সালের মধ্যেই সেরে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর পর আরও ২বছর লাগবে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে। ওই সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে গোটা প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।এই রাস্তা তৈরি হলে সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি চালাতে সুবিধা হবে ভারতের। সেই সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অনুপ্রবেশ রোখার কাজও ভাল ভাবে করা যাবে।