Arvind Kejriwal (Photo Credit: ANI/X)

Delhi Assembly Elections 2025: দেশের রাজধানী শহরের ভোট ঘোষণা হয়ে গেল। আগামী মাসেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রাজ্যে ভোটের দামামা বাজতেই গোটা দেশের নজর সে দিকে। বছরের প্রথম ভোট। মহারাষ্ট্র, হরিয়ানায় দুরন্ত জয়ের পর বিজেপির সামনে দিল্লির নির্বাচন বড় অগ্নিপরীক্ষার। কারণ দেশের বেশীরভাগ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে পারলেও দিল্লিতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে গেরুয়া শিবির। দশ বছর ধরে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জনপ্রিয়তার কাছে বিধানসভা ভোটে অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে বিজেপি।

আসুন দেখে নেওয়া যাক দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে আধডজন গুরুত্বপূর্ণ জিনিস--

১) কবে, কটি দফায় হবে নির্বাচন:

আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি এক দফাতেই নির্বাচন হতে চলেছে দিল্লির(Delhi) ৭০টি বিধানসভা কেন্দ্রে। ফলপ্রকাশ আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। ২০২০ সালেও এক দফাতেই নির্বাচন হয়েছিল দিল্লিতে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৭ জানুয়ারি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি। আগামী ১০ জানুয়ারি দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

২) কতগুলি বিধানসভা আসন আছে:

দিল্লিতে মোট ৭০টি বিধানসভা আসন আছে। রাজ্যের মোট ৭টি লোকসভার অন্তর্গত এই ৭০টি বিধানসভা আসনগুলিকে ধনী, মধ্যবিত্ত,গরীব, আদি, আধুনিক ভাগে ভাগ করেন নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা।

৩) কে কতগুলি আসনে লড়ছে, কোনও জোট হয়েছে কী:

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন মূলত তিন দলের লড়াই। লোকসভায় কংগ্রেস, আপ জোট করলেও এবার বিধানসভা ভোটে কোনও জোট হয়নি। ৭০টি আসনেই লড়ছে আপ, বিজেপি ও কংগ্রেস। বিজেপিও কার সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করছে না। দিল্লির ত্রিমুখি লড়াইয়ে আপ,বিজেপি,কংগ্রেস প্রার্থীদের পরীক্ষা। তবে ৪০টি-র বেশী আসনে সরাসরি লড়াই মূলত কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ও রাজ্যের শাসক দল আপের মধ্যে। ১০টি আসনে কোথাও বিজেপি, কোথাও আপের সঙ্গে কংগ্রেসের লড়াই হতে পারে।

৪) কোন দলের শক্তি আর দুর্বলতার জায়গা কোথায়:

গত ১০ বছর ধরে অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন। কেজরিকে বারবার ফুল মার্কস দিয়ে বিধানসভা ভোটে রেকর্ড আসনে জিতিয়ে এসেছে দিল্লিবাসী। কিন্তু দুর্নীতি কাণ্ডে তিনি নিজে ও তার ঘনিষ্ঠদের জেল খাটাকাণ্ডে কেজরির ইমেজ যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে ব্যক্তি কেজরিওয়ালই আপের সবচেয়ে বড় শক্তি। আর দুর্বলতার দিক হল দশ বছর ক্ষমতায় থাকায় প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া ও দুর্নীতি ইস্যু।

৫) মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কারা:

আবগারি দুর্নীতি কাণ্ডে জেল খাটার পর জামিনে মুক্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়েছিলেন কেজরিওয়াল। কেজরির কুর্সিতে বসেছেন আপ নেত্রী অতিশি মার্লেনা। তবে কেজরিওয়াল জানিয়ে দিয়েছেন, এবার আপ ভোটে জিতলে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন মণীশ সিসোদিয়া। ২০১৫-তে কিরণ বেদী আর ২০২০-তে ভোজপুরী অভিনেতা মনোজ তিওয়ারিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রজেক্ট করে লড়ে বড় বিপর্যয় হয়েছিল বিজেপির। তাই এবার বিজেপি সম্ভবত কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করছে না। অন্যদিকে, কংগ্রেসের কাছে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার মত কোনও বিকল্প নেই।

৬) কে কোথায় দাঁড়িয়ে:

রাজ্যের ৭০টি আসনের মধ্যে ৭০টিতেই প্রার্থী ঘোষণা করে আপ ইতিমধ্যেই প্রচারে বেশ সাড়া ফেলছে। মহিলাদের মাসে দু হাজার টাকার ভাতা, পুরোহিত, সন্তদের মাসিক ১৮ হাজার, অটোওয়া বিজেপি ধীরে চলো নীতি নিয়ে প্রথম দফায় ২৮টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। গত দুবারের ভুল করে প্রচারে আগে থেকে আগ্রাসন দেখাতে চাইছে না গেরুয়া শিবির।

বিজেপির ছক হল, শেষ দশ দিনের প্রচারে ঝড় তুলে কেজরিওয়ালকে কোণঠাসা করা। নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে গোটা দিল্লিতে অন্তত দশটি বড় জনসভা করার পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির।

কংগ্রেসের ছক হল, বিজেপি বিরোধী ভোট আর কেজরিওয়ালের দিকে না গিয়ে যাতে তাদের কাছে আসে সেটা নিশ্চিত করা। আর দিল্লি দূষণ থেকে দুর্নীতিতে মোদী, কেজরিওয়াল সমান দোষী প্রচারের ঝড় তুলে প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট নিজেদের দিকে টানা। রাহুল গান্ধী দিল্লিতে বেশ কয়েকটি বড় সভা করতে পারেন। তবে কংগ্রেসের প্রচারের মূল মুখ হতে পারে সদ্য সংসদে পা রাখা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢ়রা। ডিকে শিবকুমার, সচিন পাইলটকেও প্রচারে বড় জায়গা দিচ্ছে হাত শিবির।   নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে মহিলাদের মাসে আড়াই হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করে বাজিমাত করার চেষ্টা করেছে হাত শিবির।

গুরুত্বপূর্ণ আসন-

১) নতুন দিল্লি বিধানসভা-

অরবিন্দ কেজরিওয়াল (আপ) বনাম পরবেশ ভর্মা বনাম সন্দীপ দীক্ষিত (কংগ্রেস)।

২) কালকাজি-

অতিশি মার্লেনা, মুখ্যমন্ত্রী (আপ) বনাম অলকা লাম্বা (কংগ্রেস) বনাম রমেশ বিধুরি (বিজেপি)।

(৩) জঙ্গপুরা-

মণীশ সিসোদিয়া (আপ) বনাম তারভিন্দার সিং মারওয়া বনাম ফারহাদ সুরি (কংগ্রেস)।