'Bandit Queen' Phoolan Devi (Photo: IANS)

কানপুর, ২৭ জুলাই: মৃত্যু হল ফুলন দেবীকে (Phoolan Devi) অপহরণ ও তাঁর প্রেমিককে খুনে অভিযুক্ত ছেদা সিংয়ের (Chheda Singh)। উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়া জেলায় সেফাই সেফাই ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে তার মৃত্যু হয়েছে। তার যক্ষা রোগের চিকিৎসা চলছিল। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। ১৯৮০ সালে ফুলন দেবীর অপহরণ এবং তাঁর প্রেমিকাকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয় ছেদা। ১৯৯৮ সালে তাকে পলাতক ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০২২ সালের আউরাইয়া জেলার ভাসাউন গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার মাথায় দাম ছিল ৫০ হাজার টাকা। গ্রেফতারের পর তাকে ইটাওয়া জেলে পাঠানো হয়। সাধুর ছদ্মবেশে চিত্রকুটের জানকি কুন্ডের কাছে একটি আশ্রমে সেবাদার হিসেবে কাজ করছিল ছেদা। ইটাওয়া জেলের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট রাম ধনি বলেছেন যে ২৭ জুন ইটাওয়া জেলে বন্দি থাকাকালীন ছেদার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল, পরে তাকে সেফাই মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

আউরাইয়ার প্রাক্তন পুলিশ সুপার অভিষেক ভার্মা বলেছেন যে ছেদা চম্বল উপত্যকায় লালারাম ডাকাত দলে যোগ দিয়েছিল। সেই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২০। লালারাম এবং তার ভাই সীতারামের নেতৃত্বে গ্যাংয়ের সবচেয়ে সক্রিয় সদস্যদের মধ্যে ছিল সে। লালারাম তার প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংয়ের নেতা বিক্রম মাল্লাকে হত্যা করেছিল এবং মাল্লার গ্যাং সদস্য ফুলন দেবীকে ১৯৮০ সালে অপহরণ করেছিল। ফুলন দেবীকে গণধর্ষণও করা হয়েছিল। পরে ফুলন প্রতিশোধ নেয়। ১৯৮১ সালে বেহমাই হত্যাকাণ্ড (Behmai Massacre) চালানোর মাধ্যমে ফুলন দেবী প্রতিশোধ নেয়। তাঁর দলবল ২১ জনকে গুলি করে হত্যা করেছিল। আরও পড়ুন: SSC Recruitment Scam: এসএসসি-র নিয়োগে 'সর্বস্তর থেকে সুপারিশ আসত', ইডি কর্তাদের বলেই ফেললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়

প্রতিশোধের খেলা চলতেই থাকে। ১৯৮৪ সালের জুন মাসে আউরাইয়া জেলার আস্তাতে বেহমাই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ছেদা ও তার দলবল ১৬ জন মাল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

পুলিশ জানিয়েছে, "ছেদা খুব চালাক ছিল। নথিতে সে নিজেকে মৃত দেখিয়েছিল এবং পুরো সম্পত্তি তার ভাই অজয় ​​সিংকে দিয়ে দেয়। হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ ও চাঁদাবাজির ২০টিরও বেশি মামলায় সে ওয়ান্টেড ছিল। ছেদাকে ১৯৯৮ সালে পলাতক ঘোষণা করে আদালত। গ্রেফতারের সময় পুলিশ তার কাছ থেকে ব্রজ মোহনের নামে তৈরি একটি প্যান কার্ড, একটি আধার কার্ড এবং অন্যান্য নথি সহ জাল আইডি উদ্ধার করেছিল। তবে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তার আসল পরিচয় জানতে পারে।

এদিকে, বেইমাই হত্যাকাণ্ডের পরে ফুলন দেবী পালিয়ে বেড়াতে থাকেন। ১৯৮৩ সালে তিনি ও তাঁর গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক খুন, লুট, অগ্নিসংযোগ এবং মুক্তিপণের জন্য অপহরণ সহ ৪৮টি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল। পরবর্তী ১১ বছর জেলেই কাটিয়েছেন ফুলন দেবী। ১৯৯৪ সালে সমাজবাদী পার্টির মুলায়ম সিং যাদবের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার ফুলনের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয় এবং পরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি ১৯৯৬ সালে মির্জাপুর থেকে লোকসভা নির্বাচনে দ্বারা প্রার্থী হয়ে জয়ী হন এবং ১৯৯৯ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে দিল্লিতে ফুলন দেবীকে গুলি করে হত্যা করে শের সিং রানা।