প্রতীকী ছবি (Photo Credits: IANS)

লন্ডন, ২৪ এপ্রিল: ইউরোপে করোনাভাইরাসের (coronavirus) ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়ে গেল। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে প্রথমেই ২ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ভ্যাকসিন ইনজেক্ট করা হয়েছে। বিবিসি রিপোর্ট অনুযায়ী আরও ৮০০ জন এই গবেষণার অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। একে একে তাঁদের শরীরেও ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। এই ৮০০ জনের মধ্যে অর্ধেককে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। আর বাকিদের কন্ট্রোল ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। যা মেনিনজাইটিস থেকে সুরক্ষা দিলেও করোনাভাইরাস সুরক্ষিত নয়। তবে এই বিষয়টি চিকিৎসকরা জানলেও স্বেচ্ছাসেবীরা জানতে পারছেন না, তাঁদের শরীরে কোভিড-১৯ ব্যাকসিন না কি কন্ট্রোল ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে।

যে দুজনের শরীরে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ হয়েছে তাঁদের একজন বিজ্ঞানী, নাম এলাইজা গ্রানেটো। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, “যেভাবেই পারি এই বৈজ্ঞানিক গবেষণার স্বার্থে নিজেকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম।” অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের একটি দলেত তত্ত্বাবধানে তিনমাস ধরে কোভিড-১৯ এর এই ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের প্রি ক্লিনিক্যাল রিসার্চের নেতৃত্ব দিয়েছেন জেনার ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট। তিনি জানিয়েছেন, “ব্যক্তিগতভাবে এই ভ্যাকসিন নিয়ে আমি বেশ আত্মবিশ্বাসী। অবশ্যই মানব শরীরে প্রয়োগ করে সেই সংক্রান্ত তথ্য আমাদের নিতে হবে। একই সঙ্গে বিরাট সংখ্যাক মানুষের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগেই এটি যে আদৌ কার্যকরী এবং করোনার সংক্রমণ রুখে দেয় তা আমাদের জানাতে হবে।” আরও পড়ুন-Uttarakhand Police: হোম কোয়ারেন্টাইন মানেনি, ৬ মাসের শিশুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল পুলিশ

এই ভ্যাকসিন যে কার্যকরী তানিয়ে ৮০ শতাংশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন অধ্যাপক গিলবার্ট। আগে সেকথা জানালেও এখন তাঁর বক্তব্য, মারণ ভাইরাস রোধে এই ভ্যাকসিন তাঁকে আশার আলো দেখিয়েছে। শিম্পাঞ্জির শরীর থেকে সাধারণ এবং দুর্বল কোল্ড ভাইরাস নিয়ে এই ভ্যাকসিনটি তৈরি হয়েছে। তাই এটি মানব শরীরে বৃ্দ্ধি পাবে না। করোনাভাইরাসের আরও একটা ধরণ মার্স। সেই মার্সের ভ্যাকসিনও তৈরি করে ফেলেছে অক্সফোর্ডের গবেষকদের এই দল। একই পদ্ধতিতে সেই ভাইরাসের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে। যার ফলাফলও আশাব্যাঞ্জক। এক মাসের মধ্যে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের সঙ্গে তুল্যমূল্য বিচার করেই গবেষকের দল বুঝবে ভ্যাকসিন কাজ করছে কি না। যদি বারংবার এই প্রয়োগ ব্যর্থ হয়, তাহলে সত্যিই সমস্যার। অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু পোলার্ড বলেছেন, “বর্তমান মহমারীর ঢেউকে আমরা তাড়া করে ফিরছি। যদি আমরা তাকে ধরতে না পারি তাহলে বলতে পারব না আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই ভ্যাকসিন কাজ করবে কি না। তবে আমরা আশা করছি, আরও অনেক ঘটনা ঘটবে। কেননা এই ভাইরাস এখনও যাওয়ার নয়।” এক্ষেত্রে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য গবেষকরা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিচ্ছেন। কারণ তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। বিরাটাকারে পরীক্ষার জন্য ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর উপরে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ হতে চলেছে আগামী কয়েক মাসে। আর এঁদের কোনও বয়সসীমা থাকছে না।