
দিল্লি, ৮ এপ্রিল: গাজায় (Gaza) ক্রমাগত হামলা শুরু করেছে ইজরায়েল (Israel)। গাজার একটি চ্যারিটি কিচেনে অর্থাৎ মানুষের জন্য তৈরি রান্নাঘর এবার ভেঙে চুরমার করে দিল ইজরায়েলি বাহিনী। প্যালেস্তিনীয়দের (Palestine) জন্য যেখানে খাবার তৈরি করা হয়, সেই চ্যারিটি কিচেনে এবার হামলা চালানো হয় নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) বাহিনী তরফে। যে সময় ওই চ্যারিটি কিচেনে বহু মানুষ ছিলেন, সেই সময়ই সেখানে হামলা চালায় আইডিএফ (IDF)। ফলে বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয় বলে খবর।
রিপোর্টে প্রকাশ, গাজার চ্যারিটি কিচেনে হামলার জেরে পরপর ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যেকেই সাধারণ মানুষ। গাজার ওই চ্যারিটি কিচেনে বোমা ফেলায় যে ৩০ জনে মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুর দেহ রয়েছে। ফলে ফের ইজরায়েলি বাহিনীর নির্মমতা প্রকাশ্যে এল।
গত এক মাস আগে গাজার ২ মিলিয়ন মানুষের জন্য খাবার, জল, ওষুধপত্র প্রবেশের রাস্তা বন্ধ করে দেয় ইজরায়েল। গাজাকে প্রায় গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কাজ করে ফেলে নেতানিয়াহু বাহিনী। গাজার অভ্যন্তরে যখন খাবার, জল, ওষুধপত্র পৌঁছে দেওয়ার রাস্তা ইজরায়েল বন্ধ করে দেয়, সেই সময় থেকে শুরু হয় চ্যারিটি কিচেন। এই ধরনের রান্নাঘরেই গাজার অসহায় মানুষের জন্য খাবার তৈরির কাজ চলত। এবার সেই চ্যারিটি কিচেনের একটিকেও ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল ইজরায়েলি বাহিনী।
গাজার এক মহিলা জানান, আইডিএফের হামলায় তাঁর ভাইপোর মৃত্যু হয়েছে। ওই ওই কিচেনে গিয়েছিলেন ছোট ভাইপোর জন্য খাবার আনতে। অন্য আর এক মহিলার মেয়ে গুরুতর জখম। তিনিও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে রান্নাঘরে যান খাবার জোগাড় করতে। আর ঠিক সেই সময়েই ইজরায়েলি বাহিনী নৃশংস হামলা চালায় ওই বৃহৎ রান্নাঘরের উপর। রান্নাঘরে খাবারের থালা, বাসন থাকে বা নিয়ে যাওয়া হয়। ওই থালা বাসনই কি তাহলে অস্ত্র বলে প্রশ্ন তোলেন গাজার মহিলারা।
রবিবার রাতে গাজায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়। হামলার সময় তিনি তাবু থেকে বেরোতে পারেননি। ফলে আকাশ থেকে পড়া আগ্নিগোলায় সাংবাদিকের তাবু যেমন দগ্ধ হয়ে যায়, তেমনি তার ভিতরে পুড়ে, জ্বলে বেরিয়ে যায় তাঁর প্রাণ।
এদিকে গাজায় যখন ইজরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতা চলছে, সেই সময় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ট্রাম্পের সঙ্গে যে বৈঠক হয়, সেখানে ফের যুদ্ধ বিরতি নিয়ে হয় আলোচনা। তবে আর এক দফা যুদ্ধ বিরতির মাঝেও যে ইজরায়েল হামলা চালাবে না গাজায়, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। যদিও এবার ইজরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধ বিরতি হোক। এমনই দাবিই করা হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তরফে।
অন্যদিকে নেতানিয়াহু বলেন, তাঁরা আর এক দফা যুদ্ধ বিরতির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। যেখানে ইজরায়েলি পণবন্দিদের হামাসের কবল থেকে মুক্ত করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।