জাতিসংঘ/জেনেভা, ১৩ জুলাই: বিশ্বজুড়ে দুরন্ত গতিতে ছড়াচ্ছে করোনার ডেল্টা প্রজাতি৷ হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণের গ্রাফ৷ এই অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসুস (Tedros Adhanom) রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে তুফান গতিতে এগিয়ে চলা ডেল্টা প্রজাতি বিশ্বের ১০৪টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে৷ খুব শিগগির কোভিড বিশ্বের রাজপাট এই প্রজাতিই নিয়্ন্ত্রণ করবে৷ বিশ্বজুড়ে ফের করোনার নয়া সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি গত সপ্তাহেই একমাস পূর্ণ করেছে৷ একই সঙ্গে গত আড়াই মাসে করোনার মৃত্যুমিছিলে যেখানে অনেকটাই কমে এসেছিল, ফের তা বাড়তে শুরু করেছে৷ গেটা বিশ্ব দেখছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নতুনভাবে সক্রিয় ও ক্ষমতাশালী করছে কোভিড-১৯ ভাইরাস৷ আর এভাবেই মারণ রোগ আরও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠেছে৷ আরও পড়ুন-Third Wave of COVID-19: ৪ জুলাইতে শুরু হয়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ, কী বললেন হায়দরাবাদের বিজ্ঞানী?
এই প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, “আমরা চোখের সামনে ক্রমাগত বিপদের মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য৷ ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন হতে না হতেই ফের বিপত্তি৷ তবে টিকার উপস্থিতিতে কোথাও বিপদের আশঙ্কা সামান্য কমলেও মহামারী এখনও নির্মূল হয়নি৷ এই মহামারীকে সমূলে উৎখাত করতে গোটা বিশ্বকে একযোগে লড়তে হবে৷ ডেল্টা প্রজাতির বিস্তার বিশ্বে বাড়লেও সব জায়গায় সমানভাবে আঘাত হানতে পারেনি৷ একদিকে করোনা বাড়ছে আর একদিকে কমছে৷ মহামারীর এই দুই আবর্তের মধ্যে এখন আমরা রয়েছি৷ যেখানে টিকাকরণ থমকে আছে সেসব দেশের সামনে ঘোর বিপদ৷ কারণ ডেল্টা ও তার মতো অতি সংক্রামক করোনা প্রজাতি এমন বিপজ্জনক হারে ছড়াচ্ছে৷ যার পরিণামে আক্রান্তদের হাসপাতাল যাপন ও মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত৷”
যেসব দেশ করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউকে পরাস্ত করেছে সাফল্যের সঙ্গে৷ তাদের সামনে এক তীয় ঢেউয়ে হাতছানি৷ অন্যদিকে বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে প্রায় টাইটানিক যুদ্ধ করে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে তাঁদের অভিভাবকদের সুরক্ষা, সবটাই চ্যালে়্জের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে৷ জনগণ যদি এই পরিস্থিতিতে করোনাকে হেলাফেলা করে তাহলে সব থেকে বড় ভোগান্তির মুখে পড়বে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ তাই জনগণকে সচেতন থাকতেই হবে৷ কোভিড বিধিনিয়ম মেনে চলতেই হবে৷ এমনিতে অনুন্নত দেশগুলিতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর অভাবে স্বাস্থ্যকর্মীরা উদয়াস্ত পরিশ্রম করেও রোগীদের বাঁচাতে পারছেন না৷ তাই কোনওরকম দোহাই না দিয়ে টিকাকরণের পরিমাণ বাড়াতে হবে৷ এই মহামারীকে পরাস্ত করে মানুষ যাতে বেঁচে থাকতে পারে তা দেখতে হবে সর্বাগ্রে৷ এমনটাই মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান৷