ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর: "সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) এবং এনআরসি (NRC) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।" আজ একথা বললেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন (Bangladesh Foreign Minister AK Abdul Momen)। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, যে কোনও মধ্যে অনিশ্চয়তা প্রতিবেশীদের প্রভাবিত করতে পারে। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভ নিয়ে মোমেন আশা করেছেন যে পরিস্থিতি শান্ত হবে। এবং ভারত সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) অনুসারে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে শরর্ণার্থী হয়ে এসেছে তারা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবে। এই মাসের শুরুতেই সংসদের এই বিল পাস হওয়ার পর তা আইনে পরিণত হয়েছে। যদিও এই আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, এই আইনটি অসাংবিধানিক ও বিভাজনমূলক। কারণ এই আইনে মুসলমানদের নাম নেই। অসম, ত্রিপুরা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটক, কেরালা, বিহারসহ দেশের বেশিরভাগ রাজ্যেই বিক্ষোভ চলছে। হিংসায় উত্তরপ্রদেশে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসমেও অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আরও পড়ুন: Uttar Pradesh Police: তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে উত্তরপ্রদেশ ঢুকতে বাধা যোগী সরকারের, নেতাদের আগমনে উত্তেজনা বাড়তে পারে দাবি পুলিশের
আজ এই বিষয়ে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, "নাগরিকত্ব সংশোধন আইন এবং এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকার বারবার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে যে এগুলি তাদের ঘরোয়া সমস্যা। তারা আইনগত এবং অন্যান্য কারণে এটি করছে।" তিনি আরও বলেন, "ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কোনও পরিস্থিতিতেই এটি বাংলাদেশের ক্ষতি করবে না।" ভারতের প্রতি তাঁর আস্থা রয়েছে বলেও মোমেন জানিয়েছেন।
তবে তিনি বলেন, "আমরা ভারতের ১ নম্বর বন্ধু। সুতরাং, ভারতে যদি অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তবে এর আশপাশের দেশগুলিতেও প্রভাব পড়তে পারে। অ্যামেরিকায় যখন অর্থনৈতিক মন্দা ছিল, তখন এটি অনেক দেশকে প্রভাবিত করেছিল। কারণ আমরা বাস করি বৈশ্বিক বিশ্বে। সুতরাং আমাদের আশঙ্কা হল ভারতে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে এটি তার প্রতিবেশীদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।" মোমেন বলেন, "এটি উদ্বেগজনক। আমরা আশা করি পরিস্থিতি শান্ত হবে এবং ভারত এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটি আমাদের ইস্যু নয়। তাদের উচিত এটি মোকাবেলা করা।" এর আগে ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদের তালিকা নতুন দিল্লির কাছ থেকে ঢাকা চেয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন মোমেন। ১২ ডিসেম্বর রওনা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ভারত সফর বাতিল করেছিলেন। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী সে সময় বলেছিলেন যে অন্য জরুরি কাজ এসে যাওয়ার কারণেই তিনি ভারতে আসতে পারছেন না।