মমতা ব্যানার্জি (Photo Credits: Twitter)

কলকাতা, ৩০ নভেম্বর: উপনির্বাচনে (By Elections) নজরকাড়া সাফল্য এসেছে। তাই সেই রেশ ধরে রেখে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে পুরনো মেজাজ ফিরিয়ে এনে প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল (Trinamool Congress)। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে উদ্যোগী হল নবান্ন। বাংলাকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। সারা দেশের কাছে আদর্শ হতে পারে, বাংলার জন্য এমনই উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি দফতরকে।

নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্যের জন্য একটি সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে কয়েক দিন আগেই বিভিন্ন সরকারি দফতরের সচিব পর্যায়ের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। সেখানে আলোচনা হয়- গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে বাংলাকে গোটা দেশের সামনে উন্নয়নের মডেল করে তুলে ধরতে ইনোভেটিভ তথা উদ্ভাবনী উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে হবে। কীভাবে সেটা করা সম্ভব হবে তার পথও এদিন বাতলে দেন মুখ্যসচিব। কলকাতার সঙ্গে বিভিন্ন জেলার দূরত্ব ঘোচাতে এবং এক জেলার সঙ্গে অন্য জেলার যাতায়াতের পথ আরও মসৃণ করতে ‘ডেডিকেটেড রোড’ বা পৃথক সড়ক (Road) তৈরি করা হবে। সেই রাস্তা দিয়ে শহরের যানজট এড়িয়ে অল্প সময়েই মানুষ সহজে তাঁর গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারবেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মোট ১৭টি দফতরের সচিবরা। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে। রাজ্যের সমস্ত স্কুলের পরিকাঠামো ঘাটতি মেটাতে সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতরকে। কোথায় নতুন করে স্কুল ভবন তৈরি করতে হবে, কোথায় ক্লাস ঘরের সংখ্যা বাড়াতে, কোথায় নতুন শৌচাগার বানাতে হবে---সমস্ত বিষয়েই ভাল করে খোঁজখবর নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। এইসব কাজের জন্য আনুমানিক কত টাকা খরচ হতে পারে, তারও হিসেব দিতে বলা হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, সল্টেলেক, শিলিগুড়ির মতো শহরগুলির (Smart City) উপর চাপ কমাতে রাজ্যের কোথায় কোথায় ‘স্মার্ট সিটি’ গড়ে তোলা যায়, তার জন্য কী ধরনের পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে, তার পরিকল্পনা তৈরির জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। ২০২১ সালের আগেই বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল এবং পাইপ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার সঙ্কল্প নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার জন্য কোথায় নতুন জল প্রকল্প করতে হবে, কোথায় নতুন করে জলের পাইপ বসাতে হবে, সেটা খতিয়ে দেখে প্রতিটি ব্লক ও জেলা ধরে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে পিএইচই দফতরকে। আরও পড়ুন: Rahul Sinha On By Election Result: ইভিএম জালিয়াতি করে ভোটে জিতেছে তৃণমূল, তোপ দাগলেন রাহুল সিনহা

তাছাড়া দেশজুড়ে (India) জলের সঙ্কটের হাত থেকে বঙ্গবাসীকে বাঁচতে গোটা রাজ্যের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। জল সংরক্ষণের জন্য রাজ্যের কোন কোন জায়গায় ‘চেক ড্যাম’ অথবা ‘ব্যারাজ’ নির্মাণ করা যেতে পারে, পাহাড়ি ঝরনার জলকে কীভাবে ধরে রাখা যেতে পারে তার পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে সেচ দফতরকে। বৈঠকে মুখ্যসচিব এও জানান, টাকা কোথা থেকে আসবে, সেটা নিয়ে সচিবদের ভাবার দরকার নেই।