ঠাকুমাকে খুরপির আঘাতে খুনের পর বাবা-মাকে আহত করে ফেসবুক লাইভে হুগলির যুবক
প্রতীকী ছবি(Photo Credit: IANS)

চুঁচুড়া, ১০জুন:  ঠাকুমাকে খুরপির আঘাতে খুনের পর বাবা-মাকে আহত করে ফেসবুক লাইভে এল যুবক। সোমবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়া থানা এলাকাতে। অভিযুক্ত যুবকের নাম ইন্দ্রনীল রায়(২৭) (Indranil Roy)। ৮৩ বছর বয়সী ঠাকুমা আরতি রায়কে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাবা বিশ্বজিৎ রায় ও মা তাপসী রায়কে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ঠিক কী কারণে ইন্দ্রনীল ঠাকুমাকে মেরে ফেলল ও বাবা-মায়ের উপরে হামলা করল, তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।

উল্লেখ্য, ব্যান্ডেলের এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ার পর রেলের কর্মচারী বিশ্বজিৎ রায় ছেলেকে চুঁচুড়ার (Chinsura)  ডন বস্কোতে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। তারপর শ্রীরামপুর কলেজ (Sreerampur College)  থেকে স্নাতকের পড়া করে ওই যুবক। বাড়িতে থেকে বর্তমানে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছিল। রবিবার দমদমে এসেছিল একটি পরীক্ষা দিতে। পুলিশি জেরায় সে জানিয়েছে,  পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময় তাকে এক জন লস্যি খাওয়ায়। রাতে পারিবারিক পিকনিকও ছিল পাড়ায়। সেই পিকনিক থেকে বাবা বিশ্বজিৎবাবু (Biswajit Roy)  সাইকেলে করে বাড়ি ফেরেন। মা তাপসীকে (Tapasi Roy)  নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরে ইন্দ্রনীল। তার পর রাতে ঠাকুমার পাশের ঘরে শুতে যায়।

ব্যান্ডেলের কেওটা শিবতলা এলাকায় ইন্দ্রনীলদের দোতলা বাড়ি। একতলায় বাবা-মা থেকেন, দোতলায় নাতি ঠাকুমা পাশাপাশি ঘরে থাকতেন। রবিবার রাতে পাড়ার এক পিকনিকে যায় গোটা পরিবার। তারপর সেখান থেকে ফেরার পথে বাবা সাইকেলে বাড়িতে আসেন। মা তাপসীদেবীকে নিয়ে ফেরে ইন্দ্রনীল, ঠাকুমা বাড়িতেই ছিলেন। ভোররাতে দোতলায় চেঁচামেচির শব্দ পেয়েই জেগে যান বিশ্বজিৎবাবু। তিনি দোতলায় যেতে গেলে সিঁড়ির মুখে দেখেন হাতে রক্তাক্ত খুপরি নিয়ে ছেলে দাঁড়িয়ে আছে, বাবাকে দেখা মাত্রই তাঁর বামহাতে কোপ বসিয়ে দেয় এই আঘাতে বিশ্বজিৎবাবুর হাত কেটে হাড় ভেঙে গিয়েছে। এদিকে স্বামীর আর্তনাদ শুনে তাপসীদেবী যখন দোতলায় উঠছেন তখন মাকেও খুপরির কোপে আহত করে ছেলে। এরপর দোতলার দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন বিশ্বজিৎবাবু। তাঁদের আর্তনাদে প্রতিবেশীরা ততক্ষণে ভিড় জমিয়েছেন, পুলিশে খবর গিয়েছে। অভিযোগ, অনেকটাই দেরি করে বেলা সাড়ে নটার সময় পুলিশ আসে। ততক্ষণে ছাদে উঠে এসেছে ছেলে, পুলিশের নির্দেশে দোতলার চাবি খুলে দেওয়া হলে ইন্দ্রনীল নিচে নেমে আসে। তারপর বারান্দা থেকেই পুলিশ ও উপস্থিত জনতাকে নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করে। তাতে তার বার্তালাপও রয়েছে, ইতিমধ্যেই পুলিশ দোতলায় গিয়েদেখে রক্তাক্ত দেহে লুটিয়ে পড়েছেন আরতী দেবী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আরতীদেবীকে খুনের অভিযোগেই ইন্দ্রনীলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।