আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোট প্রক্রিয়া একেবারেই মসৃণ হচ্ছে না। এবার শুধু সিপিআইএমের সঙ্গেই জোট গড়েছে কংগ্রেস। কিন্তু অন্য বামদলগুলির সঙ্গে কোনও আসন সমঝোতা হয়নি হাত শিবিরের। বাংলায় ১২টি লোকসভা আসনে প্রার্থী দেওয়া কংগ্রেস, বাকি আসনগুলিতে সিপিআইএম-কে সমর্থন করলেও বাকি বামদলগুলিকে করবে না। পুরুলিয়ায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। কোচবিহারেও তাই হয়েছে। এমনই বিভ্রান্তিকর আসন সমঝোতার পর সিপিআইএমের আশা ছিল আইএসএফ-এর ওপর। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএম-কংগ্রেস জোট গড়ে কোনও আসন না পেলেও আইএসএফ কিন্তু ভাঙড়ে জিতে চমকে দিয়েছিল।
তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে ভাঙন ধরাতে আইএসএফ-এর ওপর বাজি ধরতে চেয়েছিল কাস্তে হাতুড়ি শিবির। কিন্তু আসন সমঝোতার বিষয়ে নওসাদ সিদ্দিকি-র দল বামেদের সঙ্গে তেমন সহযোগিতা বা আগ্রহ না দেখানোয়, এবার যে সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি সেগুলি করে দেবে সিপিএম। এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই, ফরয়ার্ড ব্লক মোট ৩১টি আসনে প্রার্থীদের নাম জানিয়েছে। এবার বাকি ১১টি আসনের নাম আগামী ক দিনের মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, রাজ্যের দুই বিধানসভা উপনির্বাচনে আসন সমঝোতায় ভগবানগোলায় প্রার্থী দিতে পারে কংগ্রেস, আর তাপস রায়ের ছেড়ে যাওয়া বরানগরে দাঁড়াবেন সিপিআইএমের প্রার্থী।
ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সিপিআইএম প্রার্থী হতে চলেছেন প্রতীক-উর রহমান। তিনি এসএফআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি ও রাজ্য কমিটির সদস্য। গত লোকসভায় ডায়মন্ড হারবারে সিপিআইএমের ফুয়াদ হালিম ৯৩ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। তবে প্রতীক-উর রহমানের নাম ঘোষণার আগে আইএসএফের সঙ্গে শেষবার কথা হবে সিপিআইএমের শীর্ষ নেতৃত্বের। ভোট ভাগাভাগিতে রুখতে মরিয়া সিপিআইএম নেতারা।
এখনও পর্যন্ত আইএসএফ আটটি লোকসভা আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তার মধ্যে ছিল বাম-কংগ্রেসের প্রার্থী দেওয়া শ্রীরামপুর, উলুবেড়িয় ও মালদহ দক্ষিণের মত কেন্দ্রও। এখানে আইএসএফ ভোট ভাগ হয়ে গেলে সমস্যায় পড়তে পারে বাম বা কংগ্রেস প্রার্থী। বাম-কংগ্রেস তাদের চারটে লোকসভা ছাড়তে চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন নওশাদ-রা, এমনটাই দাবি। বসিরহাট, ডায়মন্ড হারবারের ওপর নির্ভর করছে আইএসএফের সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতার চূড়ান্ত চিত্র।