কলকাতা, ২৩ মে: পদ্মফুলের পাঁকে ঘাসফুল ফুটিয়ে দিদির মান রাখলেন রাজ্যের চার তারকা প্রার্থী। দেব, শতাব্দী, মিমি ও নুসরত জাহান। বাবুল সুপ্রিয়র কাছে বিপুল ভোটে হেরে গেলেন আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। টলি পাড়া থেকে এবার যাদবপুর ও বসিরহাট কেন্দ্র দুটিতে টলি পাড়া থেকে নিয়ে আসেন দুই অভিনেত্রীকে। অভিনয় জগতে তাঁর সফল হলেও রাজনীতির ময়দানে মিমি(Mimi Chakraborty) নুসরতকে(Nusrat Jahan) নিয়ে খুব একটা আশায় ছিল না তৃণমূলের সমর্থকরা। কিন্তু দিদির আশা ভরসাকে ডুবতে দিলেন না এই দুই অভিনেত্রী।
বাংলায় তৃণমূলের মরা গাঙে জোয়ারের দায়িত্ব অনেকটাই নিজেদের কাঁদে তুলে নিয়েছিলেন মিমি-নুসরত। দিদিকে দেওয়া কথা রেখেছেন অনুপম হাজরা ও সায়ন্তন বসুকে ধরাশায়ী করে দুই কেন্দ্রে ঘাসফুলের জয় অক্ষুন্ন রেখেছেন তাঁরা। যাদবপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও বিজেপির অনুপম হাজরাকে বিপুল ভোটে হারিয়ে জয়ী হলেন রাজনীতিতে নবাগতা মিমি চক্রবর্তী। একইভাবে বসিরহাটে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন নুসরত জাহান। প্রায় সেই ধারাই অব্যাহত রেখে জয়ের মুখ দেখলেন তিনি। অন্যদিকে, বীরভূম কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে হ্যাটট্রিক করলেন শতাব্দী রায়। বিপুল ভোটে জিতেছেন তিনিও। ঘাটাল কেন্দ্র থেকে লক্ষাধিক ভোটে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে হারিয়ে ফের সাংসদ নির্বাচিত হলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেব ওরফে দীপক অধিকারী।ভোটে জিতে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের জন্য দশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন দেব। ঘাটালে উত্তপ্ত নির্বাচনী পরিস্থিতেও দেবের গলায় শোনা গিয়েছে সৌজন্যের সুর। রাজনীতি লড়াইয়ের সহজ অস্ত্র ‘কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি’ থেকে শতহস্ত দূরে থেকেছেন। ভারতী ঘোষকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে নিজের জয় অক্ষুন্ন রেখেছেন তিনি।
আসানসোলের মানচিত্রে গেরুয়া রং ফিকে হয়নি এতটুকুও। প্রতিদ্বন্দ্বী বাবুল সুপ্রিয়র কাছে হেরেছেন মুনমুন সেন(Moonmoon Sen)। ভোট প্রচারের সময় থেকেই বাবুলকে যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূলের পোস্টার ছেঁড়া থেকে শুরু করে, অনেক ক্ষেত্রেই প্রকাশ্যে তৃণমূল বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে জনপ্রিয়তার নিরিখে মুনমুনের অবস্থান একেবারে হেলাফেলার ছিল না। কিন্তু আজকের দিনটা বিজেপিরই, তাই বাবুলের কাছে হার মানতে বাধ্য হলেন সুচিত্রা কন্যা। ২০১৬-তে ময়ূরেশ্বরে খাটাখাটনি করেও জিততে পারেননি লকেট চট্টোপাধ্যায়(Locket Chatterjee), এবার হুগলিতে তৃণমূলের সম্মানিত প্রার্থী রত্না দে-র বিরুদ্ধে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। বীরভূমকে নিজের মতো করে চিনে নিলেও নতুন কেন্দ্র পেয়ে দমে যাননি লকেট। বরং পূর্ণ উদ্যমে কাজে লেগে পড়েন। পরিশ্রমের ফল পেয়েছেন, মানুষ তাঁকে ভালবেসে ভোট দিয়েছে। জয়ের খবর পেয়ে সাংবাদিকদের একথাই বলেন অভিনেত্রী থেকে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক নেত্রী হয়ে ওঠা লকেট চট্টোপাধ্যায়।