কলকাতা, ১৪ অক্টোবর: বাবাকে খুন করে রক্ত মেখে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করল কিশোর ছেলে। রবিবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাট থানা এলাকায় (Rajarhat police station)। অভিযোগ, ওই কিশোরের মা বধূ নির্যাতনের শিকার। প্রায় প্রতি দিনই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে তার মাকে অকথ্য মারধর করত বাবা। মারের চোটে জ্ঞান হারাতেন মা। শনিবার রাতে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল সে। মা-ও তার পাশেই ঘুমোচ্ছিলেন। আচমকাই ঘুমের মধ্যে আর্তনাদ শুনে তার ঘুম ভেঙে যায়। বিছানায় হাত দিয়ে দেখে মা নেই। পাশের ঘর থেকে মায়ের গোঙানি কানে আসতেই হুড়মুড়িয়ে সেদিকে চলে যায়। দেখে মাকে বেধড়ক মারছে মদ্যপ বাবা। এসব সহ্য করতে না পেরে বাবাকে বার দুয়েক নিষেধ করে কিশোর।
তাতেও মদ্যপ বাবার হুঁশ ফেরেনি। বরং দ্বিগুন উৎসাহে মারধর শুরু করে। একবার মায়ের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সাহায্যের জন্য চিৎকার চেঁচামেচিও শুরু করে। তাতে যখন কাজ হল না তখন প্রচণ্ড রেগে বাবার মাথাতেই একটা ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে বসল। এই আঘাতে বাবা ততক্ষণে মেঝেতে কুপোকাত। যেকোনও মুহূর্তে উঠে ফেরে মাকে ও সেই সঙ্গে তাকে বেধড়ক মারতে পারে। এই আতঙ্কে ঘরের মধ্যে থাকা পাথর দিয়ে পপাত ধরনীতল বাবার মাথায় একের পর এক আঘাত করে গেল। রক্ত ছিটে তার হাতে মুখে মাখামাখি হলে তারপর ক্ষান্ত হল সে। রাতপোহাতেই রাজারহাট থানায় হাজির হয়ে নিজের অপরাধ স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করেনি ওই কিশোর। আরও পড়ুন-Kolkata: মঙ্গলবার থেকে 'গান্ধী সংকল্প যাত্রা' শুরু করবে রাজ্য বিজেপি, জানালেন দিলীপ ঘোষ
কিশোরের স্বীকারোক্তি শুনে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে আরজি কর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বাবার খুনে অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে খুনে ব্যবহৃত রক্তমাখা পাথরটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে ধৃতের মা বা দাদার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। তারা যে পলাতক তা স্পষ্ট। এদিকে কিশোরের ওই দুজনের বিরুদ্ধেও খুন, পরিকল্পিত খুন ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের হয়েছে।