কলকাতা বইমেলা ২০২০ (Photo Credit: Social Media)

কলকাতা, ৩ ফেব্রুয়ারি: মাঘের ফুরফুরে ঠান্ডায় দ্বিপ্রাহরিক উষ্ণতা গায়ে মেখে টুক করে ঢুকে পড়লেন নয় নম্বর গেটের মুখে। সামনেই নান্দনিক মাধুর্য নিয়ে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছে কারিগর। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন সপ্তাহের কাজের দিনে হাফ লিভ নিয়ে বইমেলায় (Kolkata Book Fair) ঢুকে পড়েছি। এমনটা তো হতেই পারে, বইমেলা বলে কথা। আমার শহর যার প্রতিটা মুহূর্ত চেটেপুটে উপভোগ করতে দু’বার ভাবে না। শনি, রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় বইমেলায় উপচে পড়েছিল ভিড়। আজ সেই তুলনায় বেশ খানিকটা কম। কাজের দিনে উদ্বোধন হলেও ২৮ জানুয়ারির পর ৪৪-তম আন্তর্জাতিক বইমেলা তরতরিয়ে চলছে। অকাল বর্ষণ বেশ খানিকটা বিপত্তির কারণ হলেও প্রকাশনা সংস্থাগুলি গিল্ডের অপেশাদার মনোভাবকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছে।

এবার থিম কান্ট্রি রাশিয়া, সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডের উপরে যেন রামধনু রঙের মেলা বসেছে। বাইরে থেকে রাশিয়ার প্যাভিলিয়ন দেখলে কতকটা এমনই মনে হবে। বহু বছর পর এবার থিম কান্ট্রির প্যাভিলিয়নে বইপ্রেমীদের জন্য বেশকিছু বসার জায়গার ব্যবস্থা রয়েছে। বই মানুষের ভিড়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেওয়ার জন্য চলে আসতে পারেন এখানে। দেওয়ালে ময়ূর পাশে বড় বড় অক্ষরে লেখা রাশিয়া সামনে আরামদায়ক কৌচে একটু বসে যান। ততক্ষণে এক পাশে থরে থরে সাজানো বই আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। ইচ্ছে থাকলেও সেদিকটায় গিয়ে বিশেষ লাভ হবে না। ভাষাটা জানা থাকলে সেটি উপরি পাওনা বলতে পারেন। রিসেপশনে থাকা রাশিয়ান সুন্দরীর মিষ্টি হাসি আপনার দিন ভাল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বেরিয়ে আসুন, গলা ভেজানোর থাকলে সামনেই চায়ের স্টল। হয়ে যেতে পারে এক কাপ। আরও পড়ুন-West Bengal Weather Update: মাঘের শেষে জাঁকিয়ে শীত, এক ধাক্কায় পারদ নামল ৩ ডিগ্রি

সামনে এগিয়ে গেলে ফরাসী, ব্রিটিশ কাউন্সিল, আমেরিকা, পেরু সব পাশাপাশি। পছন্দর স্টলে শুধু ঢুকে পড়ার অপেক্ষা। ঘাড় ঘোরালেই বাংলাদেশ, বাইরে বঙ্গবন্ধুর বিরাট ছবি। বাংলাদেশের বইয়ের সম্ভার পশ্চিম বাংলার বইপ্রেমীকে বার বার টেনেছে। সে হুমায়ুন আজাদ হোক বা হুমায়ুন আহমেদ। তালিকায় রয়েছেন ইমদাদুল হক মিলন, সামসুর রহমান, রুদ্র মহম্মদ সইদুল্লাহ, এমন আরও অনেকে। গিল্ডের অফিস ছাড়িয়ে এগিয়ে আসুন। পশ্চিমবঙ্গ শিশুকল্যাণ দপ্তরের স্টলটি ভারী সুন্দর, সামনেই স্টেজ করে চলছে অনুষ্ঠান। পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য চলছে নানারকম আয়োজন। গাছ লাগানো, থেকে প্লাস্টিক বর্জন সেসবই থাকে তালিকায়। আর স্টলের ভিতরে আপনাকে টানবে সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল কবিতায় রাঙানো ক্যালেন্ডার। রঙই বলা চলে, মন ভাল করার রঙ। শুধু নিজেকে রাঙিয়ে নিলেই হয়। তাহলে বিষবাষ্পে ভরে ওঠা চারপাশটায় এক পৃথিবী সুবাতাসের পথ সুগম হবে, যা আগামীকে আহ্বানের জন্য বড় প্রয়োজন।