ব্যারাকপুর, ৩০ জানুয়ারি: আরও বাড়ল রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত। মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে ব্যারাকপুরের (Barrackpore) সিপি (Commissioner of Police) মনোজ ভার্মাকে (Manoj Verma) কড়া ধমক দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর (Governor Jagdeep Dhankhar)। তাঁর উপস্থিতিতে পুলিশ কমিশনার কেন খবরের কাগজ পড়ছেন সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন প্রসঙ্গ তুলেও তিরষ্কার করেন তিনি। বলেন, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এই সময়ের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের গান্ধীঘাটে মহাত্মা গান্ধীর স্মারক স্মৃতিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর। সেখানে পৌঁছে মনোজ ভার্মাকে খবরের কাগজ পড়তে দেখে রাজ্যপাল চটে যান। তিনি মনোজ ভার্মাকে ধমকের সুরে বলেন, "কোথায় ছিলেন এতক্ষণ? কাগজ পড়ছিলেন? রাজ্যপাল এসেছে, পুলিশ কেন যথাযথভাবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করল না? আপনারা থাকেন কোথায়? লজ্জা হওয়া উচিত। উর্দি পরে যদি এটা করেন, তাহলে অন্যরা দেখে কী শিখবে, কী করবে?"
এখানেই থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, "ক্রমাগত রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটছে। তাতে জড়িয়ে থাকা অভিযুক্তদের কেন খুঁজে বের করা হচ্ছে না?' দ্রুত অভিযুক্তদের তালিকা তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি। প্রয়োজনে তিনি নিজে সেই তালিকা তৈরিতে তত্পর হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, রাজ্যে পুলিশের উর্দির অবমাননা চলছে। আরও পড়ুন: Coronavirus Outbreak: ভারতে প্রথম, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কেরালার যুবক
এদিকে রাজ্যপালের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, "এমন রাজ্যপাল আগে দেখিনি। ইনি শিরোনামে থাকার জন্যই এ ভাবে বারবার বিতর্কিত আচরণ করছেন। সেখানে মন্ত্রী-সচিব সহ একাধিক ব্যক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি কারও সঙ্গে কথা বলেলনি।" শোভনের অভিযোগ, মঞ্চে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন ব্যানার্জিসহ একাধিক আধিকারিক। মঞ্চে রাজ্যপালকে যখন সৌজন্য সম্বোধন করেন মন্ত্রী ও আমলারা, তখন তাঁর কোনও উত্তরই দেননি বা পাল্টা সম্বোধনও করেননি রাজ্যপাল। এতেই অপমানিত বোধ করেছেন তিনি এবং স্বরাষ্ট্রসচিব।
এদিকে যথারীতি রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশের সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু (Sayantan Basu)। তিনি বলেন, "রাজ্য প্রশাসন সংবিধান মানছে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ থাকে, কাউকে সম্মান করবেন না। এই ধরনের অফিসাররাই আবার পুলিশ মেডেল পাওয়ার জন্য কেন্দ্রের লোক ধরার চেষ্টা করেন। মনোজ ভার্মা রাজনীতির ঘুঁটি হয়ে গেছেন। উর্দির সম্মান রক্ষা করা উচিত। রাজ্যপালের উচিত কেন্দ্রকে এই বিষয়ে জানানো ও হস্তক্ষেপ চাওয়া। বাংলার পুলিশ বালি, গোরুপাচারের টাকা তুলে তৃণমূলের ফান্ডে দিতে ব্যস্ত।"