শোভন চট্টোপাধ্যায়(Photo Credit: PTI)

কলকাতা, ১৩ আগস্ট: এবার বোধহয় তৃণমূলকেই ব্রাত্য করতে চলেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বিধান সভায় আসেন না, এদিকে তাঁর দায়িত্ব রয়েছে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ স্থায়ী সমিতি। এই দুটি দপ্তরের চেয়ারম্যান তিনি। বিধানসভায় তাঁর অনুপস্থিতির কারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আলোচনাও বন্ধ। তাই বাধ্য হয়েই গত শনিবার অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যায় (Assembly speaker Biman Banerjee)তাঁকে ফোন করে বিধানসভায় আসার অনুরোধ জানান। তখন স্পিকারের মুখের উপরে যুতসই জবাবটি চেপে গিয়েছিলেন শোভনবাবু। বরং বলেছিলেন, সময় পেলে বিধানসভায় যাবেন। তবে সেই যাওয়া আর হল না। তার আগে মঙ্গলবার দূতের হাত দিয়ে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিলেন তিনি। আরও পড়ুন-নগ্ন করে মেরে টাঙিয়ে রাখার হুমকির অভিযোগ, রাতারাতি বদলি নদিয়ার জেলা শাসক

বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) কথোপকথনের পর কিন্তু বেশ কিছু জল্পনার জন্ম হয়েছিল রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে। বিশেষত তৃণমূলের অন্দরে। ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন শোভন। তার পর থেকে আর বিধানসভার পথ মাড়াননি। দলের কোনও কর্মসূচিতেও যোগ দেননি। এই ন’মাসে তৃণমূলের অনেকেই শোভনের মান ভাঙানোর বা তাঁকে আবার তৃণমূলের হয়ে সক্রিয় করে তোলার চেষ্টা করেছেন। কখনও সুব্রত বক্সি ফোন করেছেন, কখনও করেছেন ফিরহাদ হাকিম। কখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায় শোভনের বাড়িতে হাজির হয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। কিন্তু কোনও কিছুতেই চিঁড়ে ভেজেনি। এই ন’মাসে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র ব্যক্তি, যাঁকে শোভন আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, সময় পেলে দেখা করবেন। তৃণমূলের একটি অংশে তাই আশার সঞ্চার হয়েছিল। স্পিকারের ফোন পাওয়ার পরে শোভন কিছুটা হলেও নরম হয়েছেন, তিনি ফের দলের হয়ে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেন। তবে সে আশা যে কথার কথা ছিল তা শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেই প্রমাণ করে দিলেন।

তৃণমূলের বড়বড় নেতাদের শুধু মুখে ফিরিয়ে দিলেও বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাই ইস্তফার প্রসঙ্গটিও দুছত্রের চিঠিতে জানিয়ে দিলেন তিনি। লিখেছেন, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে চিঠিটি শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন পাঠিয়েছেন, সেটি খুবই সংক্ষিপ্ত। ‘‘অনিবার্য কারণবশত আমি মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ স্থায়ী সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।’’ এভাবে বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূলের সঙ্গে তিনি আর নেই। মেয়র পদ থেকে অপসারণের পরেপরেই তৃণমূলের সঙ্গে শোভনের দূরত্ব বেড়েছে। মাঝে নাকি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার গুজবও রটে। তবে রটনার কিছুটা যে সত্যি তাইবা কে বলতে পারে।