ফারাক্কা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: ফারাক্কা ব্যারেজ বিপর্যয় (Farakka Barrage Accident) আজ রাজ্যে খবরের শিরোনামে। রবিবার সন্ধ্যায় নির্মীয়মাণ এই ব্রিজের ১ ও ২ নম্বর পিলারের মধ্যে গার্ডার বসানোর কাজ চলছিল। সে সময় বিপত্তি ঘটে বলে জানা যায়। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ব্রিজের একাংশ। ঘটনায় নির্মাণ সংস্থার গাফিলতি নাকি অন্য কিছু এই বিপর্যয়ের কারণ তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। এই পরিস্থিতিতে বিস্ফোরক দাবি কর লেন সাইটের ইনচার্জের (Site Manager)।
সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী তাঁর দাবি, ফরাক্কা ব্রিজের নকশায় (Plan Of Bridge) ত্রুটির ফলে এত বড় বিপর্যয়। মাত্র দেড় বছর ধরে চলছিল ফরাক্কা ব্রিজের সম্প্রসারণের কাজ। রবিবার সন্ধেয় নির্মীয়মাণ ওই ব্রিজের ১ এবং ২ নম্বর পিলারের মাঝে গার্ডার লাগানোর কাজ চলছিল। কাজ করছিলেন কমপক্ষে ৫০ জন শ্রমিক। আচমকাই প্রায় বিস্ফোরণের মতো শব্দ কানে ভেসে আসে স্থানীয়দের। মাঝগঙ্গায় নৌকায় থাকা মাঝিরাও শব্দ পান। কিছুক্ষণ পর তাঁরা বুঝতে পারে ব্রিজ বিপর্যয়ের জেরে এমন শব্দ। তড়িঘড়ি বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রাথমিকভাবে সাতজনকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে মৃত্যু হয় তিনজনের। এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে ভরতি কমপক্ষে ৪-৫জন। তাঁদের প্রত্যেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। কলকাতার হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা করা হচ্ছে আহতদের। দেড় বছর ধরে কেন ভুল নকশাতেই কাজ চলছিল, তা নিয়েই তাই উঠছে প্রশ্ন। মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই একটি নির্মীয়মাণ ব্রিজ কেন ভেঙে পড়ল, তা নিয়েও স্বাভাবিকভাবে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছিলেন, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এত বড় বিপর্যয়। যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই সাইট ইনচার্জের বয়ানে গলদ ঠিক কোথায় তা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। সাইট ইনচার্জের দাবি, ফরাক্কা সেতুর নতুন নকশাতেই ভুল ছিল। সে কথা জানানো হয়েছিল সংস্থাকে। তবে ওই নকশাতেই কাজ করতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী কাজ চলার ফাঁকেই ঘটল বিপর্যয়। এড়ানো গেল না প্রাণহানি। আরও পড়ুন: Farakka Barrage Accident: ফারাক্কা ব্যারেজের নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে মৃত ৩
এদিকে, এই ঘটনার তদন্তে দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং মালদহ জেলা পুলিশ ব্রিজ বিপর্যয়ের তদন্ত করছে। জাতীয় সড়কের প্রকল্প অধিকর্তা দীনেশ হানসারিয়া নিহতদের পরিবারকে সরকারি নিয়ম মেনে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দেন। আজ সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু (Khagen Murmu)। তিনি বলেন, “গাফিলতি চিহ্নিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে গাফিলতির দায় নিতে হবে কেন্দ্র সরকারকেও। তবে এখন রাজনীতি করার সময় নয়। নীতিন গড়করিকে আমি রিপোর্ট দেব। তারপরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”