ফের রাজনৈতিক উত্তেজনায় সরগরম (Jadavpur University)। শনিবার ওয়েবকুপার (তৃণমূল পরিচালিত শিক্ষক সংগঠন)-এর বার্ষিক সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। তিনি আসার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। অভিযোগ, বাম ছাত্র সংগঠন ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দুপক্ষের ঝামেলায় রণক্ষেত্র হয় পরিস্থিতি। প্রায় ৬ বছর আগেও এরকম এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তখন অবশ্য তিনি বিজেপিতে ছিলেন। এবারের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে অসুস্থ হয়েছেন ব্রাত্য বসু। তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।

উত্তপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

জানা যাচ্ছে, এদিন ব্রাত্য বসু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢোকার মুখেই বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়। গো ব্যাক স্লোগান, প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে প্রতিবাদ দেখান অনেকে। এমনকী অনুষ্ঠানের ফ্লেক্স, পোস্টারও ছিঁড়ে ফেলেন তাঁরা। তখন বাধ্য তিনি অন্য প্রবেশদ্বার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই সময় তাঁর গাড়ি ঘিরে প্রতিবাদ দেখান বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। এরপর ওয়েবকুপারে যোগ দিতে গেলে সেখানেও বিক্ষোভ দেখায় তাঁরা। ব্রাত্যর সভার মধ্যেই টেবিল চেয়ার ফেলে বিক্ষোভ দেখান সকলে। এরপর সেখান থেকে বেরোনোর সময় তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায়।

শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ওপর হামলা বিক্ষোভকারীদের

এরমাঝে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা এসে তাঁদের বাধা দিয়ে ব্রাত্যকে বের করানোর চেষ্টা করেন। তখনই হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায় পরিস্থিতি। জানা যাচ্ছে, ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী। এমনকী প্রতিবাদীদের আটকাতে গিয়ে চোট লাগে তাঁর নিরাপত্তরক্ষীরও। অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রী যাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোতে না পারেন সেই কারণে গাড়ির চাকার হাওয়া বের করে দেওয়া হয়। গাড়ির ওপর উঠে বসে পড়েন অনেকে। কোনওমতে তাঁকে বের করে এনে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ছাত্র সংসদের নির্বাচন করানো নিয়ে বিক্ষোভ

অন্যদিকে এই ঘটনার মধ্যে পড়ে আহত হয়েছেন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। তাঁর মাথায় চোট লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে কেপিসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্যও আহত হয়েছেন। এদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বাম সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের দাবি ছিল ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে এই নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। আর সেই নিয়েই বিক্ষোভ শুরু হয় সকাল থেকে। এমনকী ওয়েবকুপার থেকে বেরোনোর সময় ব্রাত্য বসু বলেনও যে প্রতিবাদীদের মধ্যে দুইজন প্রতিনিধি এসে যেন বৈঠকে যোগ দেয়। কিন্তু তাঁরা সেই প্রস্তাব মানতে নারাজ হন। আর তারপরেই হয় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।