কলকাতা, ১২ ফেব্রুয়ারি: রাজ্যজুড়ে একাধিক জায়গায় ধর্মঘট পালন হচ্ছে। রাজ্যের ১০টি বাম যুব সংগঠনের ডাকা নবান্ন অভিযানে পুলিশি ভূমিকার প্রতিবাদে আজ ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে। বামেদের ডাকা এই বনধের সাড়া এখনও পর্যন্ত তেমনভাবে পড়েনি। তবে এই বনধকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। তবে বরাবরই বনধের রাজনীতির বাইরে থেকেছে শাসক তৃণমূল। তাই শুক্রবারের কর্মমুখর দিনকে অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট রাজ্যপ্রশাসন।
করোনাকালে লকডাউনের পর আজ ১২ তারিখে পুনরায় স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্যসরকার। কিন্তু আগেভাগেই পড়ুয়াদের আটকানোর হুমকি দিয়ে রেখেছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। কর্মসংস্থান, রাজ্যে শিল্প আনতে হবে সংক্রান্ত একগুচ্ছ দাবি নিয়ে গতকাল ১০টি বাম ছাত্র যুব সংগঠন নবান্ন অভিযান করে। সেই মিছিলে পুলিশি লাঠিচার্যের ঘটনা ঘটলে তারই প্রতিবাদে আজ ১২ ঘণ্টার বনধের (Bangla Bandh) ডাক দিয়েছে বামেরা। শহর কলকাতায় সেই বনধের ছায়া না পড়লেও উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসছে বনধের খবর। বাম কর্মী সমর্থকরা রেল, সড়ক অবরোধ শুরু করায়। শিয়ালদহ দক্ষিণ, উত্তর ও মেন শাখায় রেল চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছে। আরও পড়ুন-Bangla Bandh Update: পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বামেদের ডাকা বাংলা বনধে সচল মহানগর, জেলায় জেলায় রেল অবরোধ
মেদিনপুর, হাওড়ায় চলছে অবরোধ। একইভাবে মধ্যমগ্রাম, বেড়াচাঁপা, কাঁচরাপাড়া, দক্ষিণ বারাসতে বাম কর্মী সমর্থকরা অবরোধ শুরু করেছেন। এদিকে আজই কিনা করোনাকাল কাটিয়ে প্রথম স্কুলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা। বনধের জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। দমদম চিড়িয়ামোড় ও বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোড অবরোধ হওয়ায় স্কুলে পৌঁছতে সমস্যায় পড়ে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। হরতাল ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ অভিভাবকদের। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের মূল গেটের সামনে চলছে ধর্মঘটীদের পিটেকিং। এদিকে বর্ধমানে ITI-এর প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে, বামেদের ধর্মঘটে পাণ্ডুয়া স্টেশনে আটকে পড়েন এক কলেজছাত্রী। রেল অবরোধের জেরে পরীক্ষায় বসতে না পারার ভয়ে স্টেশন চত্বরেই কাঁদতে শুরু করেন তিনি। যদিও পরে তাঁকে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে খবর।
টানা ১১ মাস পরে পুনরায় স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে বেজায় উৎসাহিত ছিল রাজ্যের পড়ুয়ামহল। তবে এই আচমকা ধর্মঘটে তারা বেজায় বিরক্ত। এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা কখনও স্কুল পড়ুয়াদের আটকাব না। কিন্তু, গতকালের ঘটনায় মানুষ ক্ষুব্ধ। তাই সকলেই এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানাচ্ছে। স্বতস্ফূর্ত ভাবেই বনধকে সমর্থন জানাচ্ছেন বাংলার মানুষ। পুলিশ যেভাবে ভয় পেয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের উপর লাঠিচার্জ করেছে, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ছুঁড়েছে, তার বিরুদ্ধে সকলে পথে নেমেছেন।”